নদিয়া: হাঁসখালি ধর্ষণ মামলায় প্রত্যক্ষদর্শীদের এবং নির্যাতিতার পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে হাইকোর্টে (Kolkata Highcourt) দ্রুত শুনানির আবেদন জানালেন জনস্বার্থ মামলাকারী আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। হাঁসখালিকাণ্ডে আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Highcourt)।  


উল্লেখ্য, এর আগে হাঁসখালির ঘটনায় Hanskhali) মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য অনভিপ্রেত, অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপের আবেদন করেন আইনজীবী। বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন প্রধান বিচারপতি। হাঁসখালিকাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর বয়ান দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীও। 


হাঁসখালিকাণ্ডে ডিএনএ পরীক্ষা: হাঁসখালিকাণ্ডে ডিএনএ পরীক্ষার সাহায্য নেবে সিবিআই। নির্যাতিতার বাড়ি থেকে তার নিত্যব্যবহার্য জিনিস সংগ্রহ করা হয়।  ইতিমধ্যেই হাঁসখালিকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ব্রজ ওরফে সোহেল গয়ালি-সহ তিনজনের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেছে সিবিআই। সূত্রের খবর, নির্যাতিতার মা-বাবারও ডিএনএ পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। হাঁসখালির ধর্ষণ-খুনের মামলায় পুলিশ যাঁদের বয়ান নিয়েছিল, এবার তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিবিআই। খবর সূত্রের।  


মূল অভিযুক্তের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নমুনার সঙ্গে ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হবে। ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে মূল অভিযুক্ত সোহেল ওরফে ব্রজ গয়ালি-সহ ধৃত ২ জনের। আজ ফের নমুনা সংগ্রহের জন্য ফের নির্যাতিতার গ্রামে যায় কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক দল। 


পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি: এ দিকে, হাঁসখালি রওনা দেওয়ার আগে পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানায় বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের সদস্য ও উত্তরপ্রদেশের সাংসদ রেখা বর্মা। তাঁর অভিযোগ, এই ঘটনার পরেও নির্যাতিতার পরিবারের পাশে দাঁড়াননি মুখ্যমন্ত্রী। উন্নাও, হাথরসে বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের না যাওয়া প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, ওই দুটি ঘটনায় দ্রুত গ্রেফতার করা হয়েছিল মূল অভিযুক্তকে। বিজেপির কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদলের রিপোর্ট সিবিআই তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে, তৃণমূলের এই দাবিও অস্বীকার করেছেন উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সাংসদ। 


দিলীপ ঘোষের মন্তব্য: সরকার বাঁচার চেষ্টা করছে, সত্য থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে।আমাদের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল যাচ্ছে যাতে মানুষ মনে না করে কেউ নেই। কী ঘটেছে তা জানার দরকার আছে। বিজেপির তথ্য অনুসন্ধান কমিটির হাঁসখালিতে যাওয়া প্রসঙ্গে মন্তব্য দিলীপ ঘোষের।


ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব: বগটুইয়ের পর হাঁসখালির ঘটনায় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম পাঠায় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পাঁচ সদস্যের দলে রয়েছেন যোগী সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বেবিরানি মৌর্য, লোকসভার সাংসদ ও বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভানেত্রী রেখা বর্মা, মালদার ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী, অভিনেত্রী খুশবু সুন্দর, তামিলনাড়ুর বিধায়ক ও বিজেপি মহিলা মোর্চার সর্বভারতীয় সভানেত্রী বনথি শ্রীনিবাসন। হাঁসখালিতে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কাছে রিপোর্ট পেশ করবে বিজেপির ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। 


কী হয়েছিল হাঁসখালিতে: নদিয়ার হাঁসখালিতে জন্মদিনের পার্টিতে নাবালিকা প্রেমিকাকে মদ খাইয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলের বিরুদ্ধে। পরের দিন মৃত্যু হয় ওই নাবালিকার। অভিযুক্ত প্রেমিককে আটক করে পুলিশ। অভিযোগ, নিজের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে বছর ১৪-র প্রেমিকাকে মদ খাইয়ে ধর্ষণ করে ওই যুবক। এরপর অপরিচিত মহিলাকে দিয়ে প্রেমিকাকে বাড়ি পাঠায় অভিযুক্ত। বাড়ি ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়ে নাবালিকা। পরের দিন ভোরে মৃত্যু হয় ওই কিশোরীর। পুলিশকে না জানিয়ে দেহ সত্কার করলেও গতকাল তৃণমূল নেতার ছেলের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে নাবালিকার পরিবার। ভয় দেখানোয় অভিযোগ জানাতে দেরি, দাবি মৃতের পরিবারের। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। দল এ ধরনের ঘটনা সমর্থন করে না, প্রতিক্রিয়া তৃণমূলের।