করুণাময় সিংহ, সুজিত মণ্ডল ও মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালদা: টানা এক সপ্তাহ ধরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট। প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না এলাকায়। এই অভিযোগে মালদার (Malda) চাঁচলে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে চলল বিক্ষোভ। বিদ্যুৎ অফিসের ভিতরে ও বাইরে একঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলে। চাঁচলবাসীর অভিযোগ, সন্ধে হলেই বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে না। ভ্যাপসা গরমে বিদ্যুৎ না থাকায়, মানুষ নাজেহাল হলেও বিদ্যুৎ দফতরের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। পরে চাঁচল থানার পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয়। বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
এদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরবরাহে ঘাটতি নিয়ে এবার বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের হুঁশিয়ারি। সমস্যা সমাধানে বেঁধে দিলেন ২ দিনের সময়সীমা। 'পয়সার অভাবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লা সরবরাহ করতে পারছে না। উৎপাদন কমাতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রগুলি। যার ফলে ঘাটতির পরিমাণ ১২০০ মেগাওয়াট। রাজ্যের এক বড় অংশে বিদ্যুৎ নেই'। সোমবার থেকে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দফতরের সামনে ধর্নায় বসার হুঁশিয়ারি শুভেন্দু অধিকারীর।
একাধিক জেলায় দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের অভিযোগ!
এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজ্যের একাধিক জেলায় দফায় দফায় লোডশেডিংয়ের অভিযোগ! কোথাও বিদ্যুৎ দফতরের অফিসে বাসিন্দাদের বিক্ষোভ তো কোথাও পথ অবরোধ! আর দিনের শেষে এ নিয়ে শুরু হল রাজনৈতিক তরজা। বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন বিরোধী দলনেতা। পাল্টা এল তৃণমূলের তরফেও।
পুলিশকে ঘিরেও বিক্ষোভ
বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও, গরম থেকে রেহাই মিলছে না কিছুতেই! ট্রেনে-বাসে উঠলে ঘেমে নেয়ে স্নান করার জোগাড়! গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো, অসহ্য গরমের কষ্টকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে লোডশেডিং। মালদা, থেকে পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনা, গত ১০ দিনে বেড়েই চলেছে লোডশেডিংয়ের বহর। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা! মালদার চাঁচলের বাসিন্দাদের বক্তব্য়, প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার রাতে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। তিন দিন ধরে বিদ্যুৎহীন হয়ে রয়েছে পুরাতন মালদার নিত্যানন্দপুর। শনিবার এলাকায় বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা পৌঁছলে ঘিরে ধরেন স্থানীয়রা। পুলিশ পৌঁছলে পুলিশকে ঘিরেও শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ।
লোডশেডিংয়ের জেরে ফাঁপড়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরাও। রানাঘাট থানার সুভাষপল্লি। এখানকর সিংহভাগই পাওয়ার লুমের ওপর নির্ভরশীল। অভিযোগ, গত সাতদিন ধরে চলছে বিদ্যুৎবিভ্রাট। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাস্তা অবরোধও করা হয়। দিকে দিকে লোডশেডিং! শাসককে নিশানা বিরোধীদের। রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ সংস্থা, দুর্গাপুর প্রজেক্ট লিমিটেড এর দুটি ইউনিটের মধ্যে এখন বর্তমানে চলছে একটি। সবমিলিয়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে একদিকে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে, আর তা নিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক তরজার পারদ।
আরও পড়ুন: Firhad Hakim: জল জমা ঘিরে সংঘাত, মেয়রের ফোনে মানভঞ্জন, ইস্তফা দিচ্ছেন না তারক সিংহ