কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও দীপক ঘোষ, জলপাইগুড়ি: চা শ্রমিক মায়েরা সন্তানদের ক্রেশে রেখেই যেতে পারবেন কাজে। রাজ্য সরকার সেই ব্যবস্থা করবে। জলপাইগুড়িতে দলের চা শ্রমিক সংগঠনের সভায় ঘোষণা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee)। স্বাস্থ্য, পানীয় জল থেকে বাসস্থান, প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের (Tea Garden Worker) পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
‘কল্পতরু’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়: চা শ্রমিকদের সন্তানদের জন্য ক্রেশ, ন্যূনতম নিশ্চিত মজুরি, শ্রমিক মহল্লার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নয়ন, পানীয় জলের সু-বন্দোবস্ত। চা শ্রমিকদের শ্রম দফতরের পরিচয়পত্র। চা বাগানে ‘কল্পতরু’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়! রাজনৈতিক বার্তার পাশাপাশি, চা শ্রমিকদের দৈনন্দিন জীবনের উন্নয়নে দিলেন ঢালাও প্রতিশ্রুতি। অভিষেকের আশ্বাস, সন্তানকে ক্রেশে রেখে যাতে মায়েরা কাজে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার।
গতকালের সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “৬ মাসের মধ্যে, মুখ্যমন্ত্রী শ্রমমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন ৫০ ক্রেশ তৈরি হবে, যেখানে ৫০টি বাচ্চাকে রাখা হবে। আগামীদিনে ১০০-তে বাড়ানো হবে। ৩১ মার্চের মধ্য ৫০ ক্রেশ ভরে যাবে।মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন- যদি ক্রেস তৈরি হয়, তাহলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও হবে ট্রমা কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্স থাকবে। দিদি কলকাতায় থাকলেও, আপনাদের খবর রাখেন। ৬ মাসেই হবে, ২ বছরে নয়।
অভিযোগ, চা বাগানে নির্দিষ্ট পরিমাণ চা পাতা না তুলতে পারলে শ্রমিকদের মজুরি কেটে নেওয়া হয়। সে কথা মনে করিয়ে অভিষেকের আশ্বাস, চা তোলার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও ২৩২ টাকার ন্যূনতম মজুরি পাবেন চা শ্রমিকরা। এবিষয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “চা তোলার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলেও ২৩২ টাকা পাবেন, এটা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। ‘চা সুন্দরী’ তো হচ্ছে আস্তে আস্তে। ৩ লক্ষ ৮২ হাজার চা শ্রমিক, যখন লিজ রিনিউ হবে, তখন যদি খতিয়ে দেখতে পারি পাট্টা দিতে পারি, সেটা আমরা দেখব। আপনার জায়গায় যাতে আপনারা থাকতে পারেন। বাড়ি সারাই করতে খরচ, এদিকে ২৩২ টাকা মজুরি। পরিশুদ্ধ পানীয় জল যাতে পৌঁছয়, তার জন্য আমি গিয়ে জনস্বাস্থ্য কাড়িগরিমন্ত্রীকে বলব, এক সপ্তাহের মধ্যে উত্তরবঙ্গে এসে যাতে পরিস্থিতি দেখে যান।’’
চা শ্রমিকদের সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। প্রায় ৪ লক্ষ চা শ্রমিকের জন্য সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরির জন্য তাঁকে অনুরোধ করেন অভিষেক। তাঁর বার্তা, ৩ লক্ষ ৮২ হাজার চা শ্রমিক, আগামী দিন “তাঁদের সবাই যেন আগামী দিনে একটি করে পরিচয়পত্র হয়, ৩ মাসের মধ্যে তৈরি হয়। ৩১ জানুয়ারির মধ্যে প্রত্যেক শ্রমিকের কাছে আইডি কার্ড পৌঁছে যাবে, কথা দিয়ে যাচ্ছি।’’ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ জন বার্লা বলেন, “সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ অবধি চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন কতটা হয়, তৃণমূল কত’টা ডিভিডেন্ট পায়, তার উত্তর দেবে সময়।’’