ঝিলম করঞ্জাই, বিটন চক্রবর্তী, পশ্চিম মেদিনীপুর : ২৫ এপ্রিল কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ থেকে ২ মাস ব্যাপী 'তৃণমূলে নব জোয়ার' কর্মসূচির সূচনা করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নবজোয়ার যাত্রার ৩৪ তম দিনে আজ শুভেন্দু-গড়ে পা রাখতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক সেরে দুপুর ৩টে নাগাদ পটাশপুরে পৌঁছবেন। সেখানে জনসংযোগের পর যাবেন এগরায়। সেখানে রোড শো করবেন অভিষেক। এরপর রামনগরে মন্দিরে পুজো দিয়ে কাঁথিতে পৌঁছবেন। বিরোধী দলনেতার বাড়ির এক কিলোমিটার দূরে আজ রাত্রিবাস করার কথা অভিষেকের।
এরই মধ্যে বারবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনজোয়ার যাত্রাকে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। কখনও অভিষেকের থাকার ব্যবস্থাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, ‘এক এক রাতের তাঁবু তৈরির খরচ ৯২ লক্ষ টাকা’! কখনও আবার তিনি বলেছেন, 'ও যত ঘুরবে তত বিজেপির লাভ হবে। ভোট বাড়বে বিজেপির। অতীতেও হয়েছে আগামী দিনেও হবে, তাই এ ব্যাপারে বিচলিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।' কিছুদিন আগে বাঁকুড়া জেলার ইন্দাস বিধানসভায় সভা ছিল শুভেন্দুর ৷ সেখান থেকেও তিনি আক্রমণ শানান অভিষেকের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন শুভেন্দু অধিকারী। জাতীয় সড়কে অনুমতি না নিয়ে মিছিল করার অভিযোগ তোলেন তিনি। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বিজেপি শিবির থেকে নানারকম টিকাটিপ্পনী ভেসে এসেছে নবজোয়ার কর্মসূচি নিয়ে। সম্প্রতি গড় শালবনিতে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের কনভয়ের যাত্রাপথে আছড়ে পড়ে কুড়মি বিক্ষোভ। সেই দায় বিজেপির ওপর চাপান তৃণমূলনেত্রী। বলেন, 'কুড়মিরা মারেনি। টার্গেট করেছিল অভিষেককে। মেরেছে বীরবাহাকে। বিজেপি আদিবাসী ও কুড়মিদের মধ্য়ে লড়াই লাগাতে চাইছে।' পাল্টা আক্রমণ শানান শুভেন্দু। তিনি বলেন, 'এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা মানে রাজ্য সরকার এবং শাসক দল কর্তৃক আক্রান্ত যেকোনো লোকের বিরোধী দলনেতা আমি। মুখ্যমন্ত্রী সবার মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেননি। এই সমস্যা ক্রিয়েট করেছেন মমতা ব্যানার্জি। একদিকে জনজাতিদের উসকে দিচ্ছেন, অন্যদিকে কুড়মিদের উস্কে দিচ্ছেন'
এই বাগযুদ্ধের পরিস্থিতিতেই শুভেন্দুগড়ে অভিষেকের কর্মসূচি। ফের কি একবার তীর্যক মন্তব্য, পাল্টা মন্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠবে নবজোয়ার ?
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই কর্মসূচি। যেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ,
জনসভা, রোড শো-র পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্থানীয়দের মতামতকে গুরুত্ব দিতে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে প্রার্থী বেছে নেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু করেছে তৃণমূল। কিন্তু শুরুর দিন থেকেই গোপন ব্যালটে প্রার্থী বাছাই ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। এখন পশ্চিম মেদিনীপুরের এই সভার দিকেই তাকিয়ে বাংলা।