কলকাতা: মোদি-মন্তব্যে সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi)। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন আগেই। এ বার রাহুলের সদস্যতা যাওয়াকে হাতিয়ার করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। জানালেন, মোদি-মন্তব্যে যদি অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভাবাবেগ আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে থাকে, তাহলে বাংলায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিরুদ্ধেও সেই আইন প্রযোজ্য। গুজরাত আদালতের রায়কে হাতিয়ার করে শুভেন্দুর বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানাবেন বলেও জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক।


বুধবার কলকাতার শহিদ মিনার চত্বরে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভায় বক্তৃতা করেন অভিষেক (TMC)। তার পর সন্ধেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নামঞ্চেও যান অভিষেক। দুই জায়গাতেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তফসিলি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত হানার অভিযোগ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, "মোদি পদবীর লোকেদের চোর বলায় দু'বছরের জেল হয়েছে রাহুল গান্ধীর। তাঁর সাংসদ পদ চলে গিয়েছে। তাহলে এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, যিনি বীরবাহা হাঁসদা, দেবনাথ হাঁসদাদের বলেছিলেন, 'আমার জুতার তলে থাকে', তাঁর দু'বছরের জেল হবে না কেন? কেন তাঁর পদ খারিজ হবে না?"


দেশের সংবিধান অনুযায়ী, আইন সকলের জন্য সমান হলেও, বিজেপি-র (BJP) লোকজনদের ক্ষেত্রে আইন খাটে না বলেও এ দিন অভিযোগ করেন অভিষেক। তিনি বলেন, "আইন কি আমার জন্য আলাদা, আর আপনার জন্য আলাদা?  আমি তৃণমূল করি বলে আইন এক, আর আপনি বিজেপি করেন বলে আর এক? এ কোথাকার আইন?"


বীরবাহা সম্পর্কে শুভেন্দুর মন্তব্যের ভিডিও ঘিরে কয়েক মাস আগেই উত্তাল হয়েছিল বাংলার রাজনীতি। একটি ভিডিও সামনে এসেছিল, যার সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তাতে শুভেন্দুকে বলতে শোনা যায়, “এই যে বীরবাহা, দেবনাথ বসে রয়েছে। এরা তো শিশু! এরা আমার জুতার নিচে থাকত।” এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে পদক্ষেপের দাবি তুললেন অভিষেক।


রাহুলের বিরুদ্ধে সুরত কোর্ট যে রায় দিয়েছে, সেই আইনকে হাতিয়ার করেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে তাঁরা আদালতে যাবেন বলেও এ দিন জানান অভিষেক। তিনি জানিয়েছেন, ওবিসি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগে আঘাত হয়েছে বলে যদি রাহুলের সাজা হয়, তাহলে তফসিলি সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ আঘাত করে কেন শুভেন্দু জেলে যাবেন না? এটা নিয়ে আগামী একমাসের মধ্যে পিটিশন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের আইনজীবীদের। তাঁর কথায়, "মানুষ দেখুন, যে বিচার ব্যবস্থা কাকে সমর্থন করছে, বিচারব্যবস্থা স্বাধীন কিনা। গুজরাতে  যদি ভারতের আইন প্রযোজ্য হয়, তাহলে বাংলাতেও তা প্রযোজ্য। রাহুল গান্ধীর সদস্যতা খারিজ হলে প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার হবে না কেন।" এ নিয়ে আগামী দিনে আন্দোলন তাঁরা জোরাল করবেন বলেও জানান অভিষেক।