সন্দীপ সরকার, কলকাতা: রাজ্যে হুহু করে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য দফতরের পঞ্চম সেন্টিনেল সার্ভেতে উঠে এসেছে উদ্বেগজনক ছবি। দেখা যাচ্ছে, উপসর্গ থাকা রোগীদের তুলনায় উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি


রাজ্যে বাড়ছে উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। উদ্বেগজনক ছবি সামনে এল স্বাস্থ্য দফতরের পঞ্চম সেন্টিনেল সার্ভেতে। স্বাস্থ্য দফতরের সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, রাজ্যের ৯টি জেলা এবং নন্দীগ্রাম ও বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলায় পজিটিভিটি রেট ১০ শতাংশের বেশি। 


কোথাও কোথাও যা ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে জেলা এবং স্বাস্থ্য জেলা মিলিয়ে ১১টি জায়গাকে বিপজ্জনক হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। হলুদ তালিকাভুক্ত হয়েছে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলা ও ৮টি জেলাকে। একমাত্র স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে রয়েছে মুর্শিদাবাদ। সেখানে পজিটিভিটি রেট ১ শতাংশের নীচে। 


এ দিকে স্বাস্থ্য দফতরের দৈনিক পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে রাজ্যে হুহু করে বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ। মে মাসে যেখানে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ১৪৫, সেখানে জুন মাসে আক্রান্ত ১০ হাজার ২০ জন। অর্থাত্‍ প্রায় ৯ গুণ আর জুলাইয়ের প্রথম ১০ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার পেরিয়ে গেছে। 


এই পরিস্থিতিতে সেন্টিনেল সার্ভের রিপোর্ট বলছে, প্রতিদিন যে পরিসংখ্যান সামনে আসে, রাজ্যে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যাটা তার চেয়ে সম্ভবত অনেকটাই বেশি। কী এই সেন্টিনেল সার্ভে? 


যাঁরা করোনা আক্রান্ত হননি, শরীরে করোনার কোনও উপসর্গ নেই। অন্যান্য অসুখ নিয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছেন। মূলত তাঁদের থেকে নমুনা সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষা করার প্রক্রিয়াই সেন্টিনেল সার্ভে। 


রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলা এবং স্বাস্থ্য জেলার একটি করে হাসপাতাল থেকে ৪০০টি করে নমুনা সংগ্রহ করে সেন্টিনেল সার্ভেতে পাঠানো হয়। ৬ থেকে ৮ জুলাইয়ের মধ্যে করা এই সেন্টিনেল সার্ভেতে লাল তালিকাভুক্ত জেলাগুলির মধ্যে শীর্ষে রয়েছে, নন্দীগ্রাম, যেখানে পজিটিভিটি রেট ২৪.৭৭ শতাংশ। 


দ্বিতীয় স্থানেই উত্তর ২৪ পরগনা। তৃতীয় স্থানে দার্জিলিং। চতুর্থস্থানে থাকা উত্তর দিনাজপুরের পজিটিভিটি রেট ১৮.২৫ শতাংশ। এ ছাড়া লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে কালিম্পং (১৬.৭৫), পশ্চিম বর্ধমান (১৬.৫৬), বসিরহাট (১৪.৩৬), হাওড়া (১৪.২৩), পূর্ব বর্ধমান (১৪.১৪), কলকাতা (১৩.১৩), ও নদিয়াকে। (১০.১৫)


যেসব জেলা ও স্বাস্থ্য জেলায় পজিটিভিটি রেট ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে, তাদের হলুদ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেই ৯ জেলা ও স্বাস্থ্য জেলার তালিকায় রয়েছে, জলপাইগুড়ি, মালদা, হুগলি, আলিপুরদুয়ার, রামপুরহাট, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুর , বাঁকুড়া ও
দক্ষিণ দিনাজপুর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বাকি ৭টি জেলা ও স্বাস্থ্য জেলায় পজিটিভিটি রেট ১ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে।