ঝিলম করঞ্জাই এবং সন্দীপ সরকার, কলকাতা: মৃত্যু, স্বজন হারানোর যন্ত্রণা, বেডের জন্য হাহাকার, করোনার ভয়ঙ্কর স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে, অ্যাডিনো ভাইরাস। হাসপাতালে হাসপাতালে পেডিয়াট্রিক বিভাগে বেডের অভাব। সরকারি হোক, বা বেসরকারি, কলকাতার প্রায় সব হাসপাতালেই পেডিয়াট্রিক ICU ভর্তি। 


ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেল্থ, চিত্তরঞ্জন শিশু সদন, মেডিক্যাল কলেজ, বি সি রায় শিশু হাসপাতালে সমস্ত পেডিয়াট্রিক ICU বা PICU বেড ভর্তি। NRS হাসপাতালে মোট ৩৮টার মধ্যে ৩০টি ভর্তি। বেসরকারিতেও ছবিটা একইরকম। CMRI-এ ১৮টা বেডই ভর্তি। উডল্যান্ডসে ৬ টির মধ্যে মাত্র ২ টি বেড খালি। পিয়ারলেস হাসপাতালে ৬টির মধ্যে ৩টি ভর্তি। ফর্টিসে ৪টি PICU বেড আছে। এর মধ্যে ৩টে ভর্তি। কীরকমভাবে বি সি রায় হাসপাতালে প্রচুর ভিড় হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন যে, রীতিমতো,  মুচলেকা দিয়ে, শিশুদের হাসপাতালে ভর্তি করছেন অভিভাবকরা। আইসিইউ এতটাই ভর্তি। কাগজে লিখে দিতে হয়েছিল আইসিইউ বেড খালি নয়। কিছু হলে হাসপাতাল দায়ী নয়। 


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞরা অপূর্ব ঘোষ বলেন, 'কোনও বেড নেই। বাচ্চাদের ইনসেনটিভ কেয়ার খুব সহজ ব্য়াপার নয়। ডিফিকাল্ট। বেড দিতে পারছি না। কাজেই বাচ্চাদের নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। করোনার থেকে কোনও অংশে কম বিপজ্জনক নয় অ্যাডিনো ভাইরাস। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অ্যাডিনো ভাইরাস ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করছে।' 


শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শান্তনু রায় বলেন, 'প্রাইভেটে বে়ড কম। কোথাও কোনও বেড নেই। ICU বুঝে ব্যবহার করতে হবে। একটু সুস্থ হলে এর করে নিন। কারণ সংখ্যা খুব কম।' কিন্তু কী কারণে এইসময় এই ভাইরাসের প্রকোপ? চিকিৎসকরা বলছেন, অন্যতম কারণ ইমিউনিটি গ্যাপ। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অনিরুদ্ধ ঘোষ বলেন, '২ বছরের নীচে যারা তারা সবথেকে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। যেহেতু বেডের ঘাটতি। বেড বাড়ন্ত, তাই প্রথমদিকে শ্বাসকষ্ট না থাকলে, বাড়িতে রেখেই চিকিৎসার চেষ্টা। শ্বাসকষ্ট হলে হাসপাতালে ভর্তি। ইমিউনিটি গ্য়াপের জন্য় হচ্ছে। ভিড় এলাকায় না নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ। আরও ৩ সপ্তাহ লাগবে কমতে।' একের পর এক হাসপাতালে ভর্তি অ্যাডিনো আক্রান্ত শিশুরা। চিন্তা-উদ্বেগ পরিজনদের। 


আরও পড়ুন, রিজেন্ট পার্কে বাড়ি থেকে বাবা-মা-মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার !


এই পরিস্থিতিতে, ট্রপিক্যাল মেডিসিনে একটি সমীক্ষা চালানো হয়। জানুয়ারি থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি.. এই সময়ের মধ্য়ে জ্বর-সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত ১৭৪ শিশুর নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সূত্রের খবর, এরমধ্যে ৬১ জন অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত।