বহরমপুর : মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে তৃণমূলনেত্রীর সভার দিনেই 'দল বিরোধী কাজের' জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে। সাসপেনশনের এই খবর বহরমপুরে তৃণমূলনেত্রীর সভায় এসেই জানতে পারেন হুমায়ুন ! এই পরিস্থিতিতে 'কাল অথবা সোমবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা' দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ক্ষুব্ধ তৃণমূল বিধায়ক। শুধু তা-ই নয়, '২২ ডিসেম্বর বহরমপুরে নতুন পার্টি লঞ্চ' করার কথাও জানিয়ে দেন। তৃণমূলে এই অন্তর্দ্বন্দ্বের আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও হুমায়ুন কবীরকে একযোগে বিঁধলেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, "দিদির এটা হচ্ছে চরিত্র। ইউজ অ্যান্ড থ্রো। কাজের সময় কাজি, কাজ ফুরালে পাজি। যে হুমায়ুন একদিন দিদির সম্পদ ছিলেন, আজ সেই হুমায়ুন দিদির বোঝা হয়ে গেছেন। আর বোঝা হলে দিদি তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে কাঁধ থেকে নামিয়ে দেন।"  

Continues below advertisement

অধীরের কথায়, "এই হুমায়ুন কবীরকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচনের সময় ব্যবহার করেছিলেন আমাকে হারানোর জন্য । নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই হুমায়ুন কবীরকে দিয়ে...পুলিশ-হুমায়ুন কবীর মিলে শক্তিপুরে দাঙ্গা করেছিলেন রামনবমীর দিন। সেই দাঙ্গা করার পর হুমায়ুন কবীর সগর্বে বলেছিলেন, সদর্পে সাংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, মুর্শিদাবাদে ৭০ ভাগ মুসলমান, ৩০ ভাগ হিন্দু। মনে করলে মুসলমানরা হিন্দুদের মেরে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিতে পারে। আইপ্যাকের লোকরা সেটাকে কালেক্ট করে হিন্দু গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে দিল আরও বেশি করে প্রচারের জন্য। আমার বিরুদ্ধে যিনি প্রার্থী ছিলেন ক্রিকেটার, তিনি মুসলমান ছিলেন...তাহলে মুসলমান ভোট তো পাওয়া যাবেই...হিন্দু ভোটে আঘাত হান যাতে অধীর চৌধুরী হারে। ২০১৯ সালে এই বহরমপুর লোকসভায়, যেখানে বিজেপি ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ভোট পেয়েছিল, সেখানে পৌনে ৪ লক্ষ ভোট পেয়ে গেল। আমি হারলাম, দিদির কার্য সিদ্ধি হয়ে গেল। অথচ সেদিন কিন্তু ৭০ ভাগ মুসলমান... ৩০ ভাগ হিন্দুকে মেরে ভাসিয়ে দেওয়ার কথা বললেও, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী নিন্দাও করেননি। দিদির এটা হচ্ছে চরিত্র। ইউজ অ্যান্ড থ্রো। কাজের সময় কাজি, কাজ ফুরালে পাজি। যে হুমায়ুন একদিন দিদির সম্পদ ছিলেন, আজ সেই হুমায়ুন দিদির বোঝা হয়ে গেছেন। আর বোঝা হলে দিদি তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে কাঁধ থেকে নামিয়ে দেন।"

এদিকে বহরমপুরের সভা থেকে নাম না করে হুমায়ুনকে আক্রমণ করেছেন মমতা। তিনি বলেন, "ভিতরে ভিতরে যোগাযোগ রাখবে আমাদের কারো কারো সঙ্গে। সাম্প্রদায়িকতা করার জন্য, টাকা দিয়ে ফান্ডিং করবে, আর তৃণমূলকে দোষ দেবে... এটা হবে না। কোনও দাঙ্গার প্রশ্রয় কখনো দেবেন না। কেউ কেউ টাকা খেয়ে ভোটের আগে বিজেপির তাঁবেদারি করেন। তাঁরা হচ্ছেন দেশের শত্রু। যারা নির্বাচনের দুই মাস আগে থেকে এইসব রাজনীতি করেন, এটা বিজেপির পাল্লায় পড়ে। যারা ভোটের সময় ব্ল্যাকমেলিং করেন, তাঁদের বলবেন এখন ব্ল্যাকমেলিং নয়, জীবন বাঁচানোর সময়।"

Continues below advertisement