বিজেন্দ্র সিংহ, আশিস বাগচি, সন্দীপ সমাদ্দার, কলকাতা: নিযুক্তির ঘোষণা হয়ে গিয়েছিল আগে। সেই মতো একদিন আগে শহরে পা রাখেন তিনি। তার পর বুধবার বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে শপথ নিলেন সিভি আনন্দ বোস। আর যে দিন বাংলার রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিলেন, সে দিনই বিরোধী শিবির থেকে প্রথম অভিযোগ হাতে পেলেন নয়া রাজ্যপাল।
বুধবার শপথগ্রহণের পরই আনন্দের কাছে ঝালদা পৌরসভা নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী প্রার্থী তপন কান্দু খুন হওয়ার পর সম্প্রতি ভোটে জিতে ঝালদার দখল পেয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু অধীরের আশঙ্কা, ঝালদা পৌরসভায় প্রশাসক বসাতে পারে রাজ্যের তৃণমূল সরকার।
এ দিন শপথগ্রহণের পর এক ঘণ্টাও পেরোয়নি। অধীরের অভিযোগপত্র হাতে পান আনন্দ। চিঠিতে অধীর লেখেন, 'বিশ্বস্ত সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, ঝালদা পুরসভায় প্রশাসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার, যা পুরোপুরি আইন বিরুদ্ধে এবং গণতান্ত্রিক কাঠামোর পরিপন্থী।'।
কই সঙ্গে অধীরের দাবি, ঝালদা পৌরসভার ফল ঘোষণার পর থেকেই শাসকদলের মদতে কংগ্রেস কর্মী ও নেতাদের ওপর অত্যাচার চলছে। কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দুর হত্যা থেকে শুরু করে কংগ্রেস নেতা, কর্মীদের ওপর অত্যাচার, জোর করে ঝালদা পৌরসভা দখল করে ক্ষমতায় আসার সবরকম চেষ্টা করছে শাসকদল।
অধীরের আশঙ্কা, ঝালদা পুরসভা তৃণমূলের হাতছাড়া হওয়ার পর, যখন, নির্দলদের সমর্থনে কংগ্রেসের বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তখন ঘুরপথে ক্ষমতা ধরে রাখতে, ঝালদা পুরসভার মাথায় প্রশাসক বসার কথা ভাবছে সরকার। তাই এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের দাবি করেন তিনি।
চিঠিতে অধীর লেখেন, "আমরা বুঝতে পারছি ঝালদা মিউনি তৃণমূলের হাত থেকে বেরিয়ে কংগ্রেসে আসতে চাইছে। তৃণমূল আস্থা ভোটে হেরে গেছে। E ক্যাটিগরির পুরসভা। সেটাও দখলের জন্য তৃণমূল উঠে পড়ে লেগেছে। তাই হয়ে যাওয়ার পরও, প্রশাসক নিয়োগ করতে চাইছে ঘুরপথে জটিলতা তৈরি করে। তাই রাজ্যপালের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইছি।"
তপন কান্দু খুন হওয়ার পর চলতি সপ্তাহের সোমবারই ঝালদা পৌরসভা তৃণমূলের হাতছাড়া হয়ে যায়। আস্থাভোটে, দুই নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থনে ঝালদা পুরসভায় শাসকদলকে টেক্কা দেয় কংগ্রেস। এই মুহূর্তে, ১২ আসন বিশিষ্ট ঝালদা পুরসভায় কংগ্রেস ও নির্দল মিলিয়ে মোট কাউন্সিলর সংখ্যা ৭। আর তৃণমূলের হাতে ৫। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস বোর্ড গঠন করতে পারবে, নাকি মোড় ঘুরে য়াবে খেলার, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহলের।