পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: অভিযান চালিয়ে বিপজ্জনক উপকরণ দিয়ে তৈরি বিপুল পরিমাণ নকল মদ (Adulterated Liquor )উদ্ধার করল আবগারি দফতর (Excise Department)। বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে মানুষের শরীরের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক উপকরণ দিয়ে তৈরি বিপুল পরিমাণ নকল বিদেশী মদ উদ্ধার করল বাঁকুড়া জেলা আবগারি দফতর (Excise Department)।
সূত্রের খবর পাওয়ার পরই গতকাল রাতে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার সীমানাবর্তী এলাকায় ৬০ এ জাতীয় সড়কের ধারের একটি হোটেলে হানা দেয় আবগারি দফতর। সেখান থেকে ওই বিপুল পরিমাণ নকল মদ উদ্ধারের পাশাপাশি বে আইনি ভাবে মদ মজুত রাখা ও নকল মদের ব্যবসা করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় হোটেলের মালিককে।
আবগারি দফতর সূত্রে জানা গেছে বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার সীমানাবর্তী এলাকায় রমরমিয়ে চলছে নকল মদের ব্যবসা এমন অভিযোগ আসছিল। এরপরই ওই এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধির পাশাপাশি একাধিক সোর্সকে তথ্য সংগ্রহে তৎপর করা হয়। গতকাল সন্ধ্যার মুখে খবর আসে বাঁকুড়া পুরুলিয়ার সীমানায় ৬০ এ জাতীয় সড়কের ধারে মা রক্ষাকালী হোটেল ও রেস্টুরেন্ট নামের একটি হোটেলে বিপুল পরিমাণ নকল বিদেশী মদ মজুত করা হয়েছে। খবর আসতেই অভিযানে নামে বাঁকুড়া জেলা আবগারি দফতর।
ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয় ওই হোটেলে বে আইনি ভাবে মজুত সমস্ত মদ। আবগারি দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে ওই হোটেল থেকে বাজেয়াপ্ত সমস্ত মদই নকল বিদেশী মদ। বিভিন্ন নামী দামী মদের লেভেল ও বোতল ব্যবহার করা হলেও আসলে বোতলের ভেতর থাকা অধিকাংশ মদই শরীরের পক্ষে বিপজ্জনক স্পিরিট দিয়ে তৈরি করা। লাইসেন্সবিহীন ভাবে মদ মজুত ও ব্যবসার অভিযোগে হোটেলের মালিক সোমনাথ প্রামানিককে গ্রেফতার করেছে আবগারি দফতর। তবে এই ধরনের নকল মদ কোথায় তৈরী হয়েছে এবং তা কীভাবে জেলার সীমানাবর্তী এলাকার হোটেলগুলিতে পৌঁছে যাচ্ছে তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে আবগারি দফতর।
আরও পড়ুন, গরমে কোন সরবতগুলি না খেলেই নয় ? কোনগুলি খুবই স্বাস্থ্যকর ?
আরও পড়ুন, জানেন কি রান্নাঘরের এই মশলা জীবন বদলে দিতে পারে ?
প্রসঙ্গত, এখনও কেউ ভোলেনি ভেজাল মদে বারবার রাজ্যে প্রকাশ্যে আসা মৃত্যুর ঘটনা। বাইশ সালের জুলাই মাসে পূর্ব বর্ধমানে মদ খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল বলে দাবি ওঠে। হাওড়ার ঘুসুড়িতে, তারই পুনরাবৃত্তি হয়েছিল আবার। মদে বিষক্রিয়ায় ১১ জনের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছিল সেবারও। এরইমধ্যে, পশ্চিম মেদিনীপুরে, কেশিয়াড়ি থানার বেলুট গ্রাম থেকে উদ্ধার হয়েছিল চোলাই মদ তৈরির ২ হাজার ৬০০ লিটার তরল। মিলেছিল ৯০ লিটার চোলাই মদ। এর আগে ২০১৮-র নভেম্বরে বিষ মদ খেয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন ১২ জন। তার ঠিক এক বছর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে মদের বিষক্রিয়ায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় মদ খাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছিলেন ২১ জন। তারও আগে, ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জয়নগরে একই ঘটনা ঘটেছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৫ জন।