সুজিত মণ্ডল, তাহেরপুর: আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা তালিবান। কাবুল থেকে ফিরে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন নদিয়ার তাহেরপুরের বাসিন্দা তাপস কুণ্ডু।
সোমবার কাকভোরে বাড়িতে ফেরেন তাহেরপুরের ডি-ব্লক ১৪ নম্বর রাস্তার এই বাসিন্দা। বছর ছত্রিশের তাপসবাবু ২০১৫ সালের শেষের দিকে কর্মসূত্রে আফগান পাড়ি দেন। তারপর থেকেই টানা প্রায় ছয় বছর ওই দেশে তিনি কর্মরত। শেষ দু'বছর তিনি ছুটিতে বাড়িতে আসেননি।
প্রতিমুহূর্তে পরিবেশ উত্তপ্ত পরিস্থিতি টিভির পর্দায় দেখে উদ্বেগে ছিলেন যুবকের স্ত্রী বর্ণালী কুণ্ডু। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসায় কার্যত এখন হাফ ছেড়ে বেঁচেছেন পরিবারের সদস্যরা।
যদিও এখনও ওই দেশের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা তাড়া করে বেড়াচ্ছে যুবককে। তার মনে পড়ে যায়, ব্ল্যাঙ্ক ফায়ারের সময় সঞ্জীব রুদ্র নামে রানাঘাটের বাসিন্দা তথা সহকর্মীর প্যান্ট ছুঁয়ে গুলি চলে যাওয়ার কথা।
বললেন, আফগানিস্তানে এখন তালিবানি শাসন চলছে। ওরা সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা। আফগান তালেবানদের দখলের যাবার সাত দিন পর বাড়ি ফিরতে পেরেছি। কাবুলে ইউএস আর্মিদের রান্নার কাজে যুক্ত ছিলাম। ক্যাম্পের বাইরে বের হলেই গোলাগুলি চলত।
তিনি যোগ করেন, কাবুল থেকে গত বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ১৯ তারিখ বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীদের বিশেষ কার্গো বিমানে কাতারে পৌঁছাই। সেখানে দুদিন ছিলাম। এরপর শনিবার কাতার থেকে দিল্লিতে আসি। শেষমেষ সোমবার ভোর রাতে বাড়ি ফিরে আসতে পেরেছি অনেকটাই স্বস্তি মিলেছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আমাদের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিত সেনাবাহিনী। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরতে পাড়ায় এদিন দুপুরে ওই যুবকের বাড়িতে মিষ্টি ও ফুলের মালা নিয়ে হাজির হন প্রতিবেশীরা।
এদিকে, আফগানিস্তান থেকে গতকাল রাতে বাড়ি ফেরেন নদীয়ার কৃষ্ণনগরের বাসিন্দা অভিজিৎ ঘোষ। জানালেন, আট বছর আগে কাজের সুবাদে তিনি আফগানিস্থানে যান। তিনি আফগানিস্তানে আমেরিকার সেনা ছাউনিতে কাজ করতেন। বাইরের পরিস্থিতি খারাপ। তবে সেনা ছাউনিতে নিরাপদ ছিলেন। বাড়ি ফিরে খুশি অভিজিৎ বলেছেন, ভারত সরকার এবং যে কোম্পানির আন্ডারে কাজ করতাম তারা প্রচণ্ড সাহায্য করেছে বাড়ি ফেরার জন্য।