ওড়িশার সিমলিপাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছিল বাঘিনী জিনাত। পাঁচ জেলায় ঘুরে বেরিয়েছিল সে। তাকে ধরতে রীতিমতো কালঘাম ছুটেছিল বন দফতরের কর্মীদের। অবশেষে ধরা সম্ভব হয়েছিল জিনাতকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে ওড়িশায়। জিনাতের আতঙ্কের রেশ এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই ফের মৈপীঠে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। মৈপীঠ কোস্টাল থানার শ্রীকান্ত পল্লিতে বাঘের ভয়। বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখার দাবি গ্রামবাসীদের। ঘটনাস্থলে গিয়ে সবটা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে বন দফতর এবং পুলিশ।
অন্যদিকে ঝাড়খণ্ডের বালিডি জঙ্গল-সহ ১০টি গ্রামে বাঘের আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাঁকুড়া-পুরুলিয়া সীমান্তে ঝাড়খণ্ডের বালিডি এলাকার জঙ্গল সংলগ্ন আশপাশের গ্রামে আতঙ্কে কাঁটা হয়ে রয়েছেন বাসিন্দারা। বালিডির জঙ্গলে মিলেছে বাঘের পায়ের ছাপ। বন দফতরের তরফে ঝাড়খণ্ড সীমানা সংলগ্ন এলাকায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া বাঘমুণ্ডি ও বলরামপুর ব্লকের গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বন দফতরের তরফে। ঝাড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ার ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নজরদারি। তবে বাঘের অবস্থান এখনও জানা যায়নি। বাঘের অবস্থান বুঝতে জঙ্গলে লাগানো হয়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরা।
একই সঙ্গে দু'জায়গায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা দেওয়ায় বেশ উদ্বিগ্ন স্থানীয়রা। ক'টি বাঘ কিংবা বাঘিনী এসেছে তা স্পষ্ট নয়। আদৌ ওগুলি বাঘেরই পায়ের ছাপ কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছেন বন দফতরের কর্মীরা। মৈপীঠ এবং বালিডি, দুই এলাকাতেই বন দফতরের তরফে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। বাঘের গতিবিধি নখদর্পণে রাখতে তৎপর বন দফতরের কর্মীরাও। এখন শুধুই সঠিক সময়ের অপেক্ষা। এখনও পর্যন্ত কোনও বিপজ্জনক খবর প্রকাশ্যে আসেনি। বাঘের আক্রমণে হতাহতেরও কোনও খবর নেই এখনও পর্যন্ত।
ওড়িশার সিমলিপাল থেকে পালিয়ে এসেছিল দু'টি বাঘ। প্রথমে একটি বাঘের হদিশ মিললেও বনকর্মীদের নাকানিচোবানি খাইয়েছিল জিনাত। রেডিও কলারে তার অবস্থান জানা গেলেও, দীর্ঘদিন ফাঁদে পা দেয়নি সে। এমনকি এড়িয়ে চলেছিল বন দফতরের দেওয়া টোপের খাবার। তবে শেষ পর্যন্ত বাগে আসে বাঘিনী জিনাত। চারটি ঘুম পাড়ানি গুলি লেগেছিল তাকে ধরতে। তবে কোনও ক্ষতি হয়নি বাঘিনীর। একটু সুস্থ হতেই তাকে কলকাতা থেকে পাঠানো হয়েছে ওড়িশায়।