কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: হেনস্থার কথা বলতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Aliah University) উপাচার্য মহম্মদ আলি। তিনি জানালেন, এত অপমানের পর আর আলিয়ার উপাচার্য পদে নয়, ফিরতে চান যাদবপুর বিশ্ববদ্যালয়ে (Jadavpur Univeristy)। তাঁর এই ইচ্ছের কথা তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকেও জানিয়েছেন বলে দাবি আলিয়ার উপাচার্যের। সেই সঙ্গে তিনি জানান, যা ঘটেছে তা জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) ও আচার্য রাজ্যপালকে (Jagdeep Dhankhar)।


এবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে বলেন, "শিক্ষক হিসেবে আমি ভীষণভাবে লজ্জিত এবং আতঙ্কিত।“ উপাচার্যে জানালেন, ঘটনার দিন বেরোনোর সময় গেটের কয়েকজন ছাত্র এসে তাঁকে বাধা দেয়।  মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ শিক্ষকের। তিনি বলেন, "নিরাপত্তারক্ষীকে বলি দরজায় তালা দিয়ে রাখতে যাতে ওরা ঢুকতে না পারে। নিরাপত্তারক্ষীকেও কার্যত চাপ দিয়ে দরজা খোলায় ওরা। কিছুক্ষণের জন্য বোর্ড রুমে গিয়ে বসে ছিলাম। এমনভাবে ওরা ধাক্কা মারছিল, অশালীন ভাষা ব্যবহার করছিল ফলে বাধ্য হয়ে  আবার নিজের ঘরে চলে আসি। অসহায় লাগছিল, দমবন্ধ হয়ে আসছিল।''


কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন উপাচার্য। তিনি বলেন, "একজন শিক্ষক হিসেবে ব্যর্থ বলে মনে হচ্ছিল। ঢোকার আগের মুহূর্তে পুলিশকে ফোন করে জানিয়েছিলাম। প্রথম থেকেই ভীষণভাবে দাপুটে নেতা বলে দাবি করে। কোথা থেকে এত সাহস পায় জানি না। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আর ফিরে যেতে চাই না। সুরক্ষিত মনে হচ্ছে না। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে চাই।''


এদিকে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রনেতার তাণ্ডবের ঘটনায় আজ একটি অডিও ক্লিপ সামনে আনল পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, ওই অডিও টেপে যে দু’জনের কথোপকথন শোনা গেছে, তাঁদের একজন বর্তমান ও একজন প্রাক্তন ছাত্র। যদিও ওই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। পড়ুয়াদের দাবি, দু’জনের কথোপকথনে স্পষ্ট, উপাচার্যকে অপদস্থ করে কীভাবে বিতাড়ণ করা যায়, সেই পরিকল্পনাই করা হচ্ছিল।  পড়ুয়াদের অভিযোগ, অডিও ক্লিপে জিম নওয়াজ নামে যে ব্যক্তির কণ্ঠস্বর শোনা গেছে, তিনি কতটা ক্ষমতা ধরেন ও তিনি শাসক দলের কতটা ঘনিষ্ঠ, সে বিষয়টি ফুটে উঠেছে।   আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে টিএমসিপি-র প্রাক্তন ইউনিট প্রেসিডেন্ট ও বহিষ্কৃত ছাত্র নেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলের তাণ্ডবের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শুরু হয়েছে বিতর্ক।  তাঁকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


আরও পড়ুন: SSC Case Update: এসএসসি মামলায় উপদেষ্টা কমিটির সদস্যদের সিবিআই অফিসে যেতে নির্দেশ আদালতের