অরিন্দম সেন ও রাজা চট্টোপাধ্যায়, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার: দক্ষিণবঙ্গ যখন বৃষ্টির আশায় দিন গুনছে। তখন উত্তরবঙ্গ ভাসছে বৃষ্টিতে। এমনই বৃষ্টির দাপট যে জল জমে প্রবল ভোগান্তিতে উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু এলাকা। জল-ভোগান্তির ছবি দেখা গিয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার একাধিক এলাকায়। পুরসভার গাফিলতির দিকে আঙুল তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। নিকাশি সমস্যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
ভাসছে আলিপুরদুয়ার:
রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) পুরসভার একাধিক ওয়ার্ড। কোথাও কোমর সমান জল। কোথাও আবার হাঁটু সমান জল ভেঙে রাস্তায় বেরোতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন এলাকায় একটি বেসরকারি বাস টার্মিনাস রয়েছে। সেখানেও জল জমেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বর্ষায় ভোগান্তির এই চেনা ছবি বারবার ফিরে আসে। আলিপুরদুয়ারের শোভাগঞ্জ দ্বীপচরের বাসিন্দা পিন্টু সাহা বলেন, 'নিকাশি ব্যবস্থা খারাপ। পাম্প কাজ করে না।' আলিপুরদুয়ার পুর এলাকার একাধিক ওয়ার্ডও জলমগ্ন। আলিপুরদুয়ারের কিছু এলাকায় বাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় বেড়েছে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ। আলিপুরদুয়ারের শোভাগঞ্জ দ্বীপচরের বাসিন্দা খুকু পাল বলেন, 'বাড়িতে জল ঢোকায় প্রতিবেশীর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। জলে সব জিনিস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।' বৃহস্পতিবার এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পুরপ্রধান ও সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শনে বের হন আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক।
রাজনৈতিক তরজা:
নিকাশি সমস্যা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার গাফিলতির দিকেই আঙুল তুলেছেন আলিপুরদুয়ারের একমাত্র বিরোধী কাউন্সিলর। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস (Congress) নেতা ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শান্তনু দেবনাথ বলেন, 'স্থায়ী পাম্পিং স্টেশন নেই, যে জল বের করতে পারবে।' আলিপুরদুয়ারের বিজেপি (BJP) বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, 'বেশিরভাগ ওয়ার্ড জলমগ্ন, মানুষ সমস্যায় রয়েছেন। এই বিষয়টি নিয়েও আজও কথা বলেছি। নগর উন্নয়ন মন্ত্রককেও জানিয়েছি। জলাভূমি ভরাট হওয়ায় জল বের হতে সমস্যা। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক।' দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে আশ্বস্ত করেছেন আলিপুরদুয়ার পুরসভার প্রধান। পুর প্রধান প্রসেনজিৎ কর বলেন, 'অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় এই ঘটনা। ৭টি পাম্প চলছে। প্রয়োজনে আরও পাম্প কাজে লাগাব।'
ভোগান্তি জলপাইগুড়িতেও:
গত কয়েক দিনের লাগাতার বৃষ্টিতে (Rainfall) বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে ডুয়ার্সের (Dooars) একাধিক নদীর জল। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি ব্লকে ডুডুয়া নদীর জল ঢুকে ক্ষতি হয়েছে বিঘার পর বিঘা জমি ফসলের। পাশাপাশি, জলপাইগুড়িতে ফুঁসছে তিস্তা ও করলা নদী। তিস্তা নদীর বাঁধে ফাটল দেখা দেওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করেছে সেচ দফতর। এখন টানা বৃষ্টি হলে প্লাবনের আশঙ্কায় রাতের ঘুম উড়েছে নদীপাড়ের বাসিন্দাদের।
আরও পড়ুন: পেটের মধ্যে ২৫০টি পেরেক, ৩৫টি কয়েন! রোগীর কাণ্ডে মাথায় হাত চিকিৎসকদের