অরিন্দম ভট্টাচার্য, আলিপুরদুয়ার:  বাঘ নামটা শুনলেই, বুক করে দুরুদুরু। ভয়ে, কাঁটা দিয়ে ওঠে গোটা শরীর। 


কিন্তু দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রের একমাত্র রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ‘রাজা’কে নিয়ে ভয়-ভীতি নয়। বিস্মিত বন দফতরের কর্মী থেকে কর্তারা। কারণ, বাঘ বিশেষজ্ঞদের মতে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের গড় আয়ু ১৫ থেকে ১৬ বছর। সেখানে, ২৫-এ পা দিল ‘রাজা’।


২০০৮ সালে, সুন্দরবনে কুমিরের কামড়ে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ‘রাজা’কে। প্রথমে আলিপুর চিড়িয়াখানায় চিকিৎসা চলছিল। পরে, নিয়ে আসা হয় জলদাপাড়া জাতীয় অভয়ারণ্যের দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে।


এরপর থেকে, এখানেই রয়েছে রাজা। ‘রাজা’র টানে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে ভিড় করেন বহু পর্যটক। কোভিডকালে বন্ধ রয়েছে ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে। তাই, ভার্চুয়াল মাধ্যমে পালিত হল ‘রাজা’র জন্মদিন। 


২০০০ সালে, সার্কাসে বাঘ-সিংহর খেলা দেখানো নিষিদ্ধ হলে, সার্কাস কোম্পানির থেকে ১৯টি বাঘকে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পূনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। পরে চারটি বাঘকে পাঠানো হয়, দার্জিলিঙের পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানায়। সেই সবকটি বাঘই মারা গেছে। কিন্তু, রাজার রাজত্ব রয়েই গেছে।


অন্য একটি ঘটনায়, গত শুক্রবার সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হয় এক মৎস্যজীবীর। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির খড়িয়াহাট গ্রাম থেকে গত বুধবার পাঁচজনের একটি মৎস্য জীবি দল নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়ে ছিলেন। 


শুক্রবার, বিকেল চারটে নাগাদ সুন্দরবন বাগনা এলাকায় নৌকা রেখে মাছ ধরতে নামে ৩৬ বছরের অন্ন দাস। বাকি সঙ্গীরা নৌকাতেই ছিলেন। হঠাৎ করে জঙ্গলের ভিতর থেকে বাঘ বেরিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্ন দাসের উপর। 


অন্ন দাসের সঙ্গীরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের উপর লাঠি দিয়ে আঘাত ও চেঁচাতে শুরু করলে বাঘ অন্ন দাসকে ছেড়ে পালিয়ে যায়। সঙ্গীরা অন্ন দাসকে জল থেকে নৌকায় তুলে দেখেন ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।