অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: পুরভোট (WB Municipal Polls 2022) ঘোষণার মুখে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল (TMC) ছাড়ার হিড়িক। আলিপুরদুয়ার (Alipurduar)পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস (Congress) পরিচালিত পুরসভার তিন বারের প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা এক বারের প্রাক্তন চেয়ারম্যান-সহ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগ দিলেন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অমর্যাদার অভিযোগ তুলেছেন দলত্যাগীরা।


আলিপুরদুয়ার পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দীপক দে ওরফে বাবুলাল বিগত পাঁচ দশক ধরে রাজনীতিতে। ১৯৭০ সাল থেকে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। কংগ্রেস থেকেই তিন বার আলিপুরদুয়ার পুরসভার কাউন্সিলর হন।২০০৩ সালে পুরসভার চেয়ারম্যানও হন। কিন্তু রাজ্যে বামশাসনের অবনতির পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ধারায় সামিল হতে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।


তার পর থেকে বিগত প্রায় সাড়ে ন’বছর ধরে সাধারণ কর্মী হিসেবেই তৃণমূলে ছিলেন দীপক। দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও তৃণমূলে প্রাপ্য মর্যাদা পাননি বলে অভিযোগ তাঁর। তাই পুরনো দলেই ফেরার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মতো আলিপুরদুয়ার কলেজহল্টে জাতীয় কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ে তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব। সেখানে তিনি জানান, মানসিক কষ্ট থেকে রেহাই পেলেন। পুরনো দলে ফেরাকে গঙ্গাস্নানের সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি।


আরও পড়ুন: Alipurduar: গলার নলি কাটা অবস্থায় জঙ্গল থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার, গ্রেফতার স্বামী


দীপক দলে ফিরে আসায় উচ্ছ্বসিত জেলা কংগ্রেস। জেলা কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি শান্তনু দেবনাথ বলেন, “আরও চমক অপেক্ষা করছে। শাসকদলের কোন্দল, যোগ্যদের অসম্মান করার রীতি, দুর্নীতির জেরে দুঃসময়ের কর্মীরা তৃণমূলকে প্রত্যাখ্যান করছেন।” পুরসভা নির্বাচনে শাসকদলের সঙ্গে মুখোমুখই লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব।


যদিও দীপকের দলত্যাগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল।জেলা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোনও ভাঙন ধরেনি। উনি ভাল জায়গা পাওয়ার আশায় কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন। যখন বিরোধীরা একের পর এক তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন, সেই সময় এক জনের চলে যাওয়ায় কিছু যায় আসে না।” কংগ্রেস আগে পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়ে দেখাক বলেও কটাক্ষ করেন তিনি।


যদিও তৃণমূলে নেতাদের সম্মান নেই বলে অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে বিজেপি-ও। বিজেপি-র জেলা সভাপতি ভূষণ মোদক বলেন, “যোগ্য মানুষ সম্মান নিয়ে তৃণমূলে থাকতে পারেন না। এই ঘটনা স্বাভাবিক। মানুষ বুঝতে পারছেন যে, এদের ভোট দিয়ে লাভ নেই। দীপকও দল ছেড়ে সেই বার্তাই দিয়েছেন।”