অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: পুরসভা নির্বাচনে শিক্ষক সংগঠনকে কাজে লাগাতে তৎপর হল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar News) জেলা তৃণমূল (TMC)। সেই লক্ষেই সংগঠনের শিক্ষকরা যাতে পুরোপুরি প্রচারে লিপ্ত হন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উন্নয়নমূলক কাজকর্ম মানুষের কাছে পৌচ্ছে দেওয়া যায়, সকলকে সেই নির্দেশ দিয়ে গেলেন শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি, যা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।


শনিবার আলিপুরদুয়ার তৃণমূল জেলা কার্যালয়ে পুরসভা নির্বাচন (WB Municipal Elections 2022) নিয়ে সংগঠনের শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ডব্লিউবিটিএসটিএ-র (West Bengal Trinamool Secondary Teachers' Association/WBTSTA) রাজ্য সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায়। শিক্ষকদের নিয়ে এই বৈঠক কার্যতই রাজনৈতিক শিক্ষার শ্রেণিকক্ষ হয়ে ওঠে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূলের সভাপতি প্রকাশ চিক বড়াইক। বৈঠকে জেলার দুই পুরসভা নির্বাচনে শিক্ষকদের ঝাপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি, শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠকের পর আলিপুরদুয়ার পুরসভার ৮ এবং ২০ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থীদের হয়ে পথসভাও করেন প্রকাশ।


উল্লেখ্য, এ বারের পুরসভা নির্বাচনে সাংগঠনিক ক্ষেত্রে শিক্ষকদেরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। জেলা তৃণমূলের ৩১ জনের বুথ কমিটিতে ৬ জন করে শিক্ষককে যেমন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে,  তেমনই জেলার দুই পুরসভা আলিপুরদুয়ার (২০) এবং ফালাকাটা (১৮)মিলিয়ে মোট ৩৮ জন প্রার্থীর মধ্যে স্থান পেয়েছেন ১০ জন শিক্ষক এবং ১ জন শিক্ষাকর্মী। ফলে, দলের কাছে সম্মানিত শিক্ষকদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য, দুই-ই অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি সংগঠনের।


ডব্লিউবিটিএসটিএ সংগঠনের রাজ্য সভাপতি দিব্যেন্দু বলেন, “বিদ্যালয়ের কোনওরকম ক্ষতি না করে পুরভোটে শিক্ষক সমাজকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকর্ম মানুষের দরজায় বিনম্র ভাবে পৌচ্ছে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।মানুষকে বার্তা দিতে হবে যে, আমাদের আর এক বার সুযোগ দিন। আলিপুরদুয়ার এবং নতুন পুরসভা ফালাকাটায়, যাতে আরো বেশি উন্নয়ন করতে পারি, তার সুযোগ দরকার।”


আরও পড়ুন: Anish Murder Case: 'মুখ্যমন্ত্রীর অন্যায় স্বীকার করা উচিত' অনিসের মৃত্যুতে প্রতিক্রিয়া সুজন চক্রবর্তীর


এই উদ্যোগের কারণ জানতে চাইলে দিব্যেন্দু বলেন, “যেহেতু দলের প্রত্যেকটি কমিটিতে শিক্ষকদের নেওয়া হয়েছে, ফলে শিক্ষকদের দায়িত্ব-কর্তব্য় বেড়ে গিয়েছে। শিক্ষকদের আলাদা সম্মান রয়েছে। মানুষ তাঁদের গুরুত্ব দেন। এই কারণেই শিলিগুড়িতে বিরোধীরা ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। এখানেও আশাকরি তা-ই হবে।”


তবে এ নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন জেলা বিজেপির (BJP) সভাপতি ভূষণ মোদক। তিনি বলেন, “চাপ সৃষ্টি করে তৃণমূল শিক্ষক সমাজকে প্রচারের কাজে নামাচ্ছে, যা কাজে লাগবে না। কারণ শিক্ষকরা অপমানিত। ইতিপূর্বে, শিক্ষকদের দাবি-দাওয়ার সম্মুখীন হয়ে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের অপমান করেছেন, ধমকেছেন।” কিছু শিক্ষক দায়বদ্ধতার কারণে এ কাজ করলেও, তাঁদের পরিবার তৃণমূলকে ভোট দেবে না বলেও দাবি করেন তিনি।