অরিন্দম সেন, রাজা চট্টোপাধ্যায় এবং সনৎ ঝা, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার: টানা বৃষ্টিতে ক্রমশ অশান্ত হয়ে উঠছে উত্তরবঙ্গের দুই নদী তিস্তা ও তোর্সা। দুই পাহাড়ি নদীতেই বিপদ সীমার ওপরে বইছে জল। এরই মধ্যে আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁয় ভয়ঙ্কর রূপ নেওয়া তোর্সায় ভেসে গেল দুই বোন। স্পিডবোট, ডুবুরি নামিয়ে চলছে তল্লাশি। তিস্তা ফুঁসে ওঠায়, গজলডোবায় স্লুইস গেটের উপর দিয়ে বইছে জল। মাটিগাড়ায় বসে গিয়েছে বালাসন সেতুর পিলার।



সোমবার থেকে ভুটান পাহাড় ও দার্জিলিঙের পার্বত্য এলাকায় অতিবৃষ্টির জেরে, ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে তিস্তা, তোর্সা, জলঢাকা, কালজানি নদী। প্রতিটি নদীতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে জল। শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল দশটা নাগাদ, বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল দুই বোন। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আচমকাই পাড় ভেঙে যাওয়ায়, তীব্র স্রোতে ভেসে যায় ৮ বছরের মণীষা খাতুন ও ১০ বছরের রূপসা খাতুন।


ভুটান সীমান্তবর্তী জয়গাঁর, ছোট মেচিয়াবস্তির দুই বোনের খোঁজে নামানো হয় স্পিডবোট।প্রবল খরস্রোতা তোর্সায় তল্লাশিতে নামেন ডুবুরিরা। তোর্সার মতো তিস্তাও, ভয় ধরিয়েছে জলপাইগুড়িবাসীকে। জলের চাপ এতটাই যে, গাজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজের ১০টি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে। তার জেরে প্রায় ১০ ফুট স্লুইস গেট ছাপিয়ে বইছে জল। 


জলপাইগুড়ির দোমহনী থেকে বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা। কার্যত বাঁধ ছুঁইছুঁই জল। এদিকে, প্রবল বর্ষণে দার্জিলিঙের মাটিগাড়ায় সেতুর পিলার বসে গিয়ে বিপত্তি। একত্রিশ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর থাকা বালাসন সেতুতে বন্ধ করে দেওয়া হয় যান চলাচল। 


এদিকে, সোমবার রাত থেকে লাগাতার বৃষ্টি। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, দুর্যোগ চলবে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। ছাতা মাথাতেই রাস্তায় নেমেছেন পর্যটকরা। কালিম্পং ও পাহাড়ের একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যে নেমেছে ধস! বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছাতা মাথাতেই থাকতে হবে পাহাড়কে, এমনই পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের।আশঙ্কা বাড়িয়ে কালিম্পং-এর একাধিক জায়গায় ইতিমধ্যেই নেমেছে ধস! প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রবল বৃষ্টিতে গোকে থেকে সিঙ্গল বাজার সড়কে নেমেছে ধস। রিম্বিকের একটি লোহার সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রবল বৃষ্টিতে। ব্যাহত হয়েছে সুখিয়াপোখরি থেকে মানেভঞ্জন পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা। বহু পর্যটক আটকে পড়েছেন সান্দাকফু ও মানেভঞ্জনে।