শুভেন্দু ভট্টাচার্য, কোচবিহার: পঞ্চায়েত ভোটের মুখে কোচবিহারে (Coochbehar) তৃণমূল (TMC) শিবিরে বড় ধাক্কা। যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে, পদত্য়াগ করলেন ১৪ জন বুথ সভাপতি। যদিও স্বজনপোষণের অভিযোগ মানতে রাজি নন তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল সভাপতি। ক্ষমতায় ফিরতে পারবে না বুঝেই পদত্যাগ, কটাক্ষ করেছে বিজেপি (BJP)।
২৯ মার্চ, বুধবার শহিদ মিনার চত্বরে তৃণমূলের ছাত্র-যুবদের সমাবেশ। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee)। জেলায় জেলায় চলছে তার প্রস্তুতি। কিন্তু এরইমধ্য়ে, কোচবিহারে যুব তৃণমূলে লাগল বড় ধাক্কা। তুফানগঞ্জে ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলে পদত্য়াগ করলেন শালবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলের যুব তৃণমূলের ১৪ জন বুথ সভাপতি।
বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, কাউকে কিছু না জানিয়ে, নতুন অঞ্চল কমিটি ঘোষণা করেছেন তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূলের সভাপতি মানিক বর্মন। তাঁদের দাবি, এই কমিটি অবৈধ। তালিকায় সই নেই জেলা সভাপতির।
শালবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলের যুব তৃণমূল কংগ্রেস সহ সভাপতি মিল্টন লায়েক বলছেন, ব্লক কমিটি থেকে যুব সভাপতি নিজের প্য়াডে কমিটি ঘোষণা করল। শালবাড়ি ওয়ানে। জেলা সভাপতির সিগনেচার পেলাম না। সব ক্ষেত্রেই ব্লক সভাপতি, জেলা সভাপতির যৌথ সিগনেচারে ভাঙা গড়া হয়। এটা কি ভ্য়ালিড। যুব সভাপতিরা এসেছেন। ওঁরাও সহমত। আমরাও পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। কারণ বর্তমান ব্লক সভাপতিদের একপেশে মনোভাব।
শুধু তাই নয়, পদত্য়াগীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের তৃণমূল কর্মীদের বাদ দিয়ে, অন্য়দল থেকে যাঁরা সদ্য় তৃণমূলে যোগ দিয়েছে, তাঁদেরকে পদ পাইয়ে দিচ্ছেন বুথ সভাপতি।
শালবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি মিল্টন লায়েকের কথায়, জুনিয়র বলে ছোটদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেয়। নিজের পকেটের লোককে পদ দেয়। অন্য় দল থেকে যারা এসেছে, তাঁদের পদে আসীন করা। তাই সভাই পদত্য়াগ করবে। বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে বলে মনে হয়।
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বুথ সভাপতি। তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মানিক বর্মনের কথায়, যে অভিযোগ পুরোটাই ভুল কথা। নিয়ম মেনেই কমিটি গঠন। অথেন্টিক কিনা, সেটা জেলা সভাপতি বলতে পারবেন। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেই হয়। বুথ সভাপতি আছে কিনা জানা নেই।
তৃণমূল সূত্রে খবর, শালবাড়ি ১ নম্বর অঞ্চলে তৃণমূলের মোট ১৬টি বুথ রয়েছে। তার মধ্য়ে ১৪টি বুথের সভাপতিই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলের এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে আক্রমণ শানাতে ছাড়েনি বিজেপি। কোচবিহারের বিজেপি জেলা সম্পাদক উৎপল দাস, তৃণমূলের যা অবস্থা, দুর্নীতি, তা দেখেই আর কেউ দলে থাকতে পারছে না।
২০১৮'র পঞ্চায়েত ভোটে, কোচবিহারে সেভাবে দাঁত ফোটাতে পারেনি গেরুয়া শিবির। প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় তৃণমূল। কোচবিহার জেলা পরিষদ, ১২টি পঞ্চায়েত সমিতির সবকটি ও ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২৭টিতে জয়ী হয় তৃণমূল। ১টি যায় বিজেপির হাতে। এই প্রেক্ষাপটে, আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কী হয়, সেটাই এখন দেখার।