অমিতাভ রথ, ঝাড়গ্রাম: ২০১০ সালে মুক্তি পেয়েছিল অক্ষয়কুমারের 'খাট্টা মিঠ্যা'। কমেডি ছবি আচমকাই গুরুগম্ভীর হয়ে উঠেছিল। 'দুর্নীতি'-র  বিরুদ্ধে কখন যে আঙুল তুলেছিল, বুঝতেই পারেনি কেউ। সাল ২০১১। অর্থাৎ ঠিক তার পরের বছরেই পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠন করেছিল তৃণমূল। দেখতে দেখতে একাধিক নির্বাচন হয়ে গিয়েছে রাজ্যের বুকে। নানাবিধ অভিযোগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে জেরবার শাসকদল। আর সেই সব সিরিয়াস ইস্যু নিয়ে স্ট্যান্ডআপ কমেডির খোঁচা ফিরছে বিরোধীদের মুখে মুখে। গতবছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূল বিধায়ককে কাদা ভর্তি রাস্তায় হাঁটানোর দৃশ্য দেখেছিল রাজ্যবাসী। যা নিয়ে তোপ দাগতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুও। আর এবার লোকসভা ভোটের আগে ফের উঠে এল গুরুতর অভিযোগ। সদ্য নির্মিত রাস্তায় হাত দিলেই হাতে উঠে আসছে পিচের আস্তরণ। বেরিয়ে আসছে গুটি। রাস্তা নির্মাণ নিম্নমানের সামগ্রী ও দুর্নীতির অভিযোগ বিনপুর এক নম্বর ব্লকের দহিজুড়ি এলাকায়। ক্ষোভে ফুঁসছে এলাকার বাসিন্দারা।




মূলত, গত কয়েকদিন আগে রাতেই বিনপুর এক নম্বর ব্লকে, রাস্তায় পিচের প্রলেপ পড়েছে। কিন্তু গাড়ি চলাচল করতেই উঠতে শুরু করেছে পিচ।কয়েক ফুট ছাড়া ছাড়াই রাস্তার একই অবস্থা। যা নিয়ে ক্ষোভ মানুষের। গত ৬ মাস আগে এই রাস্তায় অবরোধ করেছিল গ্রামের মানুষ স্কুল ছাত্র-ছাত্রীরা। তাঁদের দাবি ছিল,' সঠিকভাবে নির্মিত হোক রাস্তা।' যা নিয়ে রাস্তা নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল স্থানীয় প্রশাসন। দহিজুড়ি এলাকায় দহিজুরি থেকে পরিহাটি যাওয়ার রাস্তার কাজ শুরু হয়। কিন্তু পিচের পলেপ পড়ে রাস্তা কাজ হয়েছে। গাড়ি চলাচল করতেই পিচের পলেপ  উঠতে শুরু করেছে। রাস্তার গুটি বেরিয়ে আসছে, ক্ষুব্ধ হচ্ছেন স্থানীয় সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলের অভিযোগ রাস্তার নির্মাণ কাজে বেনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়েছে। যার ফলে রাস্তার বেহাল অবস্থা। 


এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই স্থানীয় বাসিন্দা জানিয়েছেন, 'রাস্তা কালকে হয়েছে। এদিকে আজকেই উঠে যাচ্ছে। আমরা চাই, রাস্তাটা ভাল ভাবে হোক। খুব নিম্নমানের কাজ হয়েছে এটা।' স্থানীয় প্রশাসন এটা খতিয়ে দেখেছে কিনা ? প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানিয়েছেন, 'ওই স্থানে কোনও পিডব্লুডি-র অফিসারকেই তিনি আসতে দেখেননি।' একই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত পালেরও। তবে 'খারাপ কাজ হয়েছে' এই অভিযোগ মেনে নিলেন পিডব্লুডি অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রণবীর ঘোষ। তিনি বলেন, 'একদমই। আমি নিজে পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি। যে লেয়িংটা ওরা করেছে, সেটা আমাদের দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা নিজেরাই ওদের এজেন্সিকে জানিয়েছি।' 




আরও পড়ুন, 'সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন পুরপ্রধান..', অনাস্থা আনলেন দলেরই কাউন্সিলররা


যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতা ইমামের যুক্তি, 'লোকাল পাবলিকরাই এটা তদারকিটা করেছে। যাতে রাস্তাটা একটু ভাল করে মেরামত হয়। কাজে ভুল হচ্ছে ! একটা সাইড তৈরি করে সেটাকে ৩ দিন অফ রাখা উচিত। তিনদিন সেখান দিয়ে যাতায়াত করা উচিত নয়। রাস্তার পিচ পড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি চলছে।' অফরদিকে, বিজেপি জেলা প্রেসিডেন্ট তুফান মাহাতো বলেছেন, পরিকল্পনা বিহীন কাজ। দুর্নীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তৃণমূল মানেই দুর্নীতি।আর দুর্নীতি মানেই তৃণমূল। যেখানে কাটমানি আছে, সেখানেই তৃণমূল আছে।উন্নয়নের নামে টাকা আত্মসাৎ-র কাজ চলছে !'