কলকাতা: রেশন দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। সেই আবহে পূর্বতন বাম সরকারকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের। তাঁর দাবি, ২০১১ সালে তৃণমূল যখন রাজ্যে ক্ষমতায় আসে, সেই সময় ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। তাঁর সরকার সেই ১ কোটি কার্ড বাতিল করে রেশন কার্ডের ডিজিটালকরণ ঘটিয়েছে। অনেক রেশন কার্ডও বাতিল করতে চেয়েছিল তাঁর সরকার, কিন্তু আইনি বিধিনিষেধে তা হয়ে ওঠেনি। 


পূর্বতন বাম সরকারকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের। সরাসরি রেশন দুর্নীতি নিয়ে মন্তব্য না করলেও, বাম আমলের অব্যবস্থার কথা এদিন তুলে ধরেন তিনি। বলেন, "আজ সিপিএম বড় বড় কথা বলছে। আদালত, ED বা CBI-কে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত মতামত রয়েছে। কিন্তু সেই নিয়ে কিছু বলব না আমি। কিন্তু বলে রাখছি, আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড ছিল। ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড থাকার অর্থ, সেই রেশন কেউ না কেই তুলতেন! সেই টাকা কোথায় যেত? আজ পর্যন্ত তদন্ত হয়েছে?"


এদিন মমতা জানান, রাজ্যে তৃণমূল সরকার আসার পরই রেশন কার্ড ডিজিটালকরণের কাজ শুরু হয়। মমতা বলেন, "আমরা রেশন কার্ড ডিজিটালকরণ শুরু করি। সেই কাজে সাত-আট বছর সময় লেগেছে। ১ কোটি ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিল করেি আমরা। মানুষের প্রাপ্য রেশন নিয়ে বিক্রি করে দিত দালালরা। আমরাই ধরেছি। গ্রেফতার হয়েছে। রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ ছিল। অনেক রেশন দোকান বাতিল করতে চেয়েছিলান। কিন্তু পারিনি। কারণ কোর্টের নির্দেশ মানতে হয়েছে। বার বার কোর্টে ছুটতে হয়েছে। বিচারপতিদের নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু বার বার দৌড়নো, বার বার স্থগিতাদেশের ফলে দুই-তিন বছর মরিয়া লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু কোভিডে একজন মানুষও অনাহারে মারা যাননি। বরং ওই সময় বেশি চাল দিয়েছি। একটি পরিবারও বলতে পারবেন না যে রেশন পাননি।"


আরও পড়ুন: Dilip Ghosh: 'পশ্চিমবঙ্গের ক্ষতি হয়েছে, লাভবান শুধু মমতা', সিঙ্গুর ইস্যুতে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ দিলীপের


এদিন মমতা আরও জানান, কেন্দ্রীয় সরকারও ১০০ শতাংশ ডিজিটালকরণের জন্য রাজ্যের প্রশংসা করেছে। কিন্তু ৩৪ বছরের উত্তরাধিকার কাটিয়ে উঠতে সময় লেগেছে তাঁদের। গত দুই-তিন বছরে সব পরিষ্কার হয়েছে। এখনও বামফ্রন্টের অনেক লোক পদে রয়েছে। কারও চাকরি খাননি তিনি। সেই চাকরি কী করে হল কেউ জানে না। একজনের জায়গায় আর একজন চাকরি করছেন। কিন্তু এখন যত দোষ,নন্দ ঘোষ। 


প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারি ঘিরে এই মুহূর্তে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি। একযোগে তৃণমূলকে আক্রমণ করে চলেছে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস। কিন্তু মমতার দাবি, প্রমাণ ছাড়াই সবাইকে অপরাধী ঘোষণা করে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারগুলির কী অবস্থা একটি বারও ভাবছেন না কেউ। সরাসরি বিজেপি-কেও নিশানা করেন তিনি। বিজেপি-র কত জনের ক'টি করে ফ্ল্যাট রয়েছে, কত বেনামি সম্পত্তি রয়েছে, কার টাকায় বিদেশ গিয়েছেন, সব হিসেব তাঁদের কাছেও রয়েছেন। তিনি প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে, তাঁরাও কাগজ বের করতে বাধ্য হবেন।