পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : এক বছর আগে বাড়িতে এসে অমিত শাহ মধ্যাহ্নভোজ সেরে মেয়ের চিকিৎসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি বলে দাবি বাঁকুড়ার চতুরডিহি গ্রামের আদিবাসী পরিবারের। তৃণমূলের বিরুদ্ধেও উঠেছে অসহযোগিতার অভিযোগ। যদিও দু’দলেরই পাল্টা দাবি, তারা কথা রেখেছে।


বাঁকুড়ার চতুরডিহির বাসিন্দা বিভীষণ হাঁসদা বলছেন, আমাকে নিয়ে রাজনীতি করেছে তৃণমূল-বিজেপি। আমার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুক ওরা। 


প্রতিশ্রুতির বর্ষপূর্তি। অথচ এখনও মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেয়নি কেউই। এমনটাই দাবি করছেন বিভীষণ। 


আজ থেকে বছর খানেক আগের কথা। বাংলায় তখন জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে বিধানসভা ভোটের। জনতার দরজায় দরজায় ঢুঁ মারছেন রাজনীতির কারবারিরা। গত বছরের ৫ নভেম্বর চতুরডিহি গ্রামে এই আদিবাসী বাড়িতে এসেছিলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিভীষণ হাঁসদার বাড়িতে পাত পেড়ে মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন তিনি। তখনই অমিত শাহকে, নিজের মেয়ের অসুস্থতার কথা বলেছিলেন পেশায় দিনমজুর বিভীষণ। সব শুনে দিল্লির এইমসে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন অমিত শাহ।


এরপরই আদিবাসী পরিবারকে নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে যায় তৃণমূল আর বিজেপির। পালা করে বিভীষণের বাড়ি ছুটে যান দু’দলেরই নেতারা। তুলে দেওয়া হয় সাহায্য। ইতিমধ্যে চুকেছে ভোটপর্ব। বছর পেরিয়েছে প্রতিশ্রুতির। কিন্তু তা পূরণ হয়েছে নামমাত্র। এমনই দাবি করে আক্ষেপ করছেন আদিবাসী দম্পতি। বিভীষণ হাঁসদা বলেন, বিজেপি সাংসদ ব্যবস্থা করেন ওষুধের। ২-৩ মাস পর থেকে আর খোঁজ নেই। তৃণমূলও বলেছিল, কিন্তু ওরাও কিছু দেয়নি। 


অন্যদিকে মনিকা হাঁসদা বলেন, আমি রান্না করে খাইয়েছিলাম। চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি, আমাদের কষ্ট করতে হচ্ছে।


যদিও তৃণমূল হোক কী বিজেপি, দুই দলই দাবি করছে দিনমজুর পরিবারের পাশে রয়েছে তারা। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শ্যামল সাঁতরা বলেন, একাধিক মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কাজের কাজ কিছু হয়নি। আমরা বিভীষণের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি। অমিত শাহ মিথ্যে কথা বলে প্রচার করে গেছেন।


যদিও বিজেপি সাংসদ ও কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার বলছেন, বানিয়ে বলছেন আপনারা। ওঁর বাড়িতে নিয়মিত ওষুধ পৌঁছনো হয়। উনি নির্দিষ্ট জায়গায় গেলে ওষুধ পাবেন, ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।


তবে হতদরিদ্র পরিবারটি এত শত কিছু বুঝতে চায় না। মেয়ের চিকিৎসা কীভাবে হবে সেটাই ভাবাচ্ছে বাবা-মাকে।