কলকাতা: এক সময় বাংলায় এসে সংশোধিত নাগরিকত্ব (CAA/সিএএ) কার্যকরের কথা নিজেই জানিয়েছিলেন তিনি। তার পর দীর্ঘ নীরবতা। অভ্যন্তরীণ তরজা-পর্ব। কিন্তু শুক্রবার উত্তরবঙ্গে ফের নিজেই সিএএ প্রসঙ্গ টেনে আনলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। জানিয়ে দিলেন, তৃণমূল (TMC) গুজব ছড়াচ্ছে। করোনা কেটে গেলেই সরকার সিএএ কার্যকর করবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) যদিও ফের শাহের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন।
অমিত শাহের মুখে ফের CAA
একদিকে বিজেপি নেতারা যখন উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য হিসেবে মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন, সেই সময় বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে সিএএ প্রসঙ্গ টেনে আনেন শাহ। তিনি বলেন, "সিএএ চালু করা হবে না বলে গুজব রটাচ্ছে তৃণমূল। আজ স্পষ্ট বলে যাচ্ছি আমি, করোনার ঢেউ থিতিয়ে এলেই সিএএ কার্যকর করতে শুরু করবে সরকার। মমতাদি আপনি কি চান অনুপ্রবেশ চলুক? শরণার্থীরা নাগরিকত্ব না পান? কান খুলে শুনে নিন তৃণমূলীরা, সিএএ বাস্তবিক ছিল, আছে এবং আগামী দিনেও থাকবে।"
যদিও রাজ্য কমিটির বৈঠকে শাহের মন্তব্য নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি কার্যত উড়িয়ে দেন মমতা। তিনি বলেন, "রোজকার মিথ্যেচারকে আমি ভ্রষ্টাচার মনে করি। আমি তো বাংলার সকলকে নাগরিক বলেই মনে করি। নইলে ভোট দিলেন কী করে? যদি নাগরিকই না হন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করলেন কীভাবে। নাগরিকত্বের নাম করে এ ভাবে কাউকে অপমান করার অধিকার নেই।"
আরও পড়ুন: BJP: 'বঞ্চনা,শোষণের শিকার',শাহের বঙ্গ সফরে উত্তরবঙ্গকে আলাদা করার দাবি BJP বিধায়কের।Bangla News
২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর লোকসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাস হয় সংসদে। রাজ্যসভায় তা পাস হয় ওই বছর ১১ ডিসেম্বর। ১২ ডিসেম্বর CAA’র বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তা আইনে পরিণত হয় ২০২০-র জানুয়ারি মাসে। কিন্তু এখনও তার রুলিং জারি হয়নি, অর্থাৎ নিয়ম-নীতি ঠিক হয়নি। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন এবং ২০২১-এর বাংলা বিধানসভা নির্বাচনের আগেও সিএএ কার্যকর করার কথা শোনা যায় শাহের মুখে। ২০২১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি, ঠাকুরনগরের সভা থেকে অমিত শাহ বলেছিলেন, টিকাকরণ শেষ হলে,তারপরই নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া সেরে ফেলা হবে।
বঙ্গভঙ্গের দাবিও জোর পেল অমিতের আগমনে
এর পর গতবছর জুলাই মাসে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ সংসদে জানতে চেয়েছিলেন, CAA’র কাজ কত দূর এগিয়েছে? কবে এর নিয়ম-নীতি প্রকাশ করা হবে? জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, CAA’র নিয়ম-নীতি ঠিক করতে আরও ছ’মাস সময় লাগবে। এর জন্য সংসদে ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় চেয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সরকার। তাই সিএএ চালুর কথা শুধু কথা হয়ে রয়ে যাওয়ায় অসন্তোষ তৈরি হয়েছে মতুয়াদের মধ্যেও। তার মধ্যেই ফের একবার বাংলায় এসে সিএএ প্রসঙ্গ উস্কে দিলেন শাহ।