কলকাতা: পোস্টারকাণ্ড এবং আদালতের এজলাস আটকে বিক্ষোভের ঘটনায় আদালত অবমাননার রুল জারি করে অভিযোগ খণ্ডন করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা (Justice Raja Sekhar Mantha)। নির্দেশনামায় বিচারপতি মান্থা জানিয়েছেন, বিচারপতির সম্মানহানি হয় এ ধরনের অভিযোগের সঙ্গে তাঁর বাসস্থান নিয়ে বেপরোয়াভাবে পোস্টারে ভুল ও মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে। কারণ এই বাসস্থানের রেজিস্ট্রি, রেজিস্ট্রার অফ অ্যাসিওরেন্স, কলকাতার কাছে করা হয়েছে। সেই নথিও এই মামলার রেকর্ডে রাখতে বলেছেন বিচারপতি।


নির্দেশনামায় বিচারপতি মান্থা জানিয়েছেন, কিছু আইনজীবী ও অন্য ব্যক্তিরা আদালতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করতে চেয়েছেন। পোস্টারে মিথ্যা-ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে তাঁরা আদালতের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে চেয়েছেন। মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন পোস্টার দিয়ে আদালত ও বিচারপতিকে কলঙ্কিত করার প্রবণতা আসলে জনমানসে আদালত ও বিচারপতির ক্ষমতাকে ছোট করে দেখানোর চেষ্টা। বিচারব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সম্প্রদায়ের আত্মবিশ্বাসে ঝাঁকুনি দেওয়ার চেষ্টা করার পাশাপাশি, ঝাঁকুনি দেওয়াও হয়েছে। আদালত অবমাননার রুল জারি করে নির্দেশনামায় এমনটাই বলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। 


এখনও অধরা অভিযুক্তরা: রবিবার রাতে বিচারপতির বাড়ির সামনে পোস্টার মারা হয়েছিল। একইরকম পোস্টার পড়েছিল হাইকোর্ট চত্বরেও। তারপর পার হয়েছে, তিন তিনটে দিন। কিন্তু, এখনও কেউ গ্রেফতার হল না। সিসিটিভি ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও, কেন এখনও অভিযুক্তরা নাগালের বাইরে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।


আদালতের সম্মান নষ্ট করবেন না: বাড়ির সামনে পোস্টার থেকে এজলাসে আইনজীবীদের একাংশের বিশৃঙ্খলা। আজ এজলাসে উপস্থিত বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদককে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, আমার একটা অনুরোধ। আদালতের সম্মান নষ্ট করবেন না। শুধুমাত্র আমার এজলাস নয়, অন্য কোনও বিচারপতির এজলাসের সামনেও যাতে এই ঘটনা না ঘটে, সেদিকে নজর দিন।


হেয়ার স্ট্রিট থানায় মামলা রুজু: বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নামে হাইকোর্টে পোস্টারকাণ্ডে হেয়ার স্ট্রিট থানায় মামলা রুজু হয়। ব্যাঙ্কশাল আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০১ ও ৩ নম্বর ডিফেসমেন্ট অ্যাক্টে মামলা রুজু হয়েছে। 


এই এজলাসের সামনে আর কিছু হবে না, বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক হিসেবে আশ্বস্ত করছি। আশা করছি, দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। তবে দু’ পক্ষ না থাকলে কোনও মামলার রায় না দেওয়ার অনুরোধ করছি। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে জানালেন বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিশ্বব্রত বসু মল্লিক। বিচারপতি বলেন, আমার অনুরোধ, আদালতের সম্মান নষ্ট করবেন না। শুধুমাত্র আমার এজলাস নয়, অন্য কোনও বিচারপতির এজলাসের সামনে যাতে এই ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর দিন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মামলার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে হবে। মন্তব্য করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।