কলকাতা: 'চাকরি-বিক্রির ৬১ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে গোপাল দলপতির স্ত্রীর সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে গোপাল ওরফে আরমানের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে টাকা। তার মধ্যে ৩৯ লক্ষ টাকা জমা পড়ে উত্তরবঙ্গের এক প্রভাবশালী নেতার পিএ-র অ্যাকাউন্ট থেকে। গতকাল গোপালের সঙ্গে মুখোমুখি জেরায় কুন্তল এমনটাই বলেছেন বলে দাবি সিবিআই সূত্রের।


উল্লেখ্য, গত ১৭ ফেব্রুয়ারিই ১৪ দিনের জেল হেফাজতের মেয়াদ শেষ হয়েছে কুন্তল ঘোষের। সেদিনই যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষকে বিচারভবনের ইডি স্পেশাল কোর্ট পেশ করা হয়। সূত্রের খবর, মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে যোগসূত্র নিয়ে নতুন তথ্যপ্রমাণ পেশ করে ইডি। পাশাপাশি কুন্তল ঘোষের জামিনের আবেদনের বিরোধিতাও করে তারা। মঙ্গলবারই ইডি সূত্রে দাবি করা হয়, জেরায় ধৃত যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষ জানিয়েছেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি, নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা পৌঁছেছিল মানিক ভট্টাচার্যের কাছেও। ৩ জন হ্যান্ডেলারের মাধ্যমে সেই টাকা পাঠানো হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতির কাছে। 


ইডি সূত্রে খবর, কুন্তল ঘোষকে জেরা করে ও বিভিন্ন সূত্র মারফত ২৫ জন এজেন্টের নাম পাওয়া গেছে, যারা কুন্তল ঘোষকে টাকা দিয়েছিলেন চাকরির জন্য। ইডি সূত্রে খবর, এরকম ৮ জন এজেন্টকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে ইতিমধ্য়েই। কত জনের জন্য টাকা দেওয়া হয়? ইন্টারভিউয়ে পাস করিয়ে ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন করিয়ে দেওয়া হয়েছিল কতজনের, এজেন্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তার তালিকা তৈরি করতে চাইছে ইডি। ইতিমধ্য়েই, ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, আপার প্রাইমারির চাকরি পাইয়ে দিতে ৮ লক্ষ টাকা করে নিতেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষ। প্রাইমারির জন্য নিতেন ৭ লক্ষ। এমনকি, কলকাতা হাইকোর্ট যখন প্যানেল বাতিল করে তখনও সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বেশ কয়েকজনের কাছ থেকে ১-২ লক্ষ করে টাকা নিতেন কুন্তল ঘোষ। 


তাপস গ্রেফতারিতে কুন্তলের প্রতিক্রিয়া: এরপর  নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয় তাপস মণ্ডল। তাঁর গ্রেফতারে প্রতিক্রিয়ায় দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ বলেন, 'আমার অভিযোগ যে সত্যি হল, এটা জেনে খুশি হলাম'।


অন্যদিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআইয়ের নজরে আসে তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ, নীলাদ্রি ঘোষের ‘ত্রিভুজ’। সিবিআই সূত্রে দাবি, চাকরি-বিক্রির নামে কোটি কোটি টাকা লেনদেনে জড়িত তাপস, কুন্তল ও নীলাদ্রি। তিনজনই একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে বাঁচার চেষ্টা করছেন। তাই কুন্তলকে আজ নিজেদের হেফাজতে চাইবে সিবিআই। সূত্রের খবর, তাপস, কুন্তল ও নীলাদ্রিকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।


আরও পড়ুন: DA Agitation: ঝাঁঝ বাড়ছে আন্দোলনের, মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ধিক্কার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত