অর্ণব মুখোপাধ্যায়, কলকাতা ও হাওড়া: গতবছর পাড়ায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে গিয়ে তৃণমূলের হুমকি-শাসানির মুখে পড়েছিলেন আনিস খান (Anish Khan)। ফেসবুক লাইভে, নিজেই এই অভিযোগ করেছিলেন তিনি। শাসক দলের কোন নেতা, কীভাবে তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন? কীভাবে হুমকি (Threat) দিয়েছিলেন? ফেসবুক লাইভে তা নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছিলেন তিনি।


আনিসের খুনের বিচার চাই....এই দাবিতে শ’য়ে শ’য়ে পড়ুয়ার মুষ্টিবদ্ধ হাত উঠেছে রাজপথে।নির্ভীক আনিসও অন্যায় দেখলে  প্রতিবাদে গর্জে উঠতেন। তার জন্য হুমকি-শাসানি-অত্যাচারও কম সহ্য করতে হয়নি তাঁকে! ফেসবুক লাইভে নিজের মুখে, সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছিলেন তিনি।


গতবছর ২ মে বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন আনিস খান।  লিখেছিলেন, মৃত্যুকে আমি আলিঙ্গন করে নেব, তবুও কোনও দালালের কাছে মাথা নত করব না। 


অভিযোগ, তারপরই শুরু হয় শাসকের চোখ রাঙানি। ফেসবুক লাইভে সেকথা জানিয়েছিলেন খোদ আনিস।  তিনি ফেসবুক লাইভে বলেছিলেন, এই পোস্টের পরই তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, এ সব কেন লিখেছিস? এর জবাব দিতে হবে তোকে। 


এর জবাবে আনিস বলেছিলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত অধিকার। কী করব, না করব, সেটা আমি জানি। 


ফেসবুক লাইভে আনিস দাবি করেন, সংযুক্ত মোর্চাকে সমর্থন করায়, বিধানসভা ভোটের সময় থেকেই তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছিল।  ফেসবুক লাইভে তিনি বলেছিলেন, পূর্ব থেকেই আমাকে টার্গেট করে আসছে... আমার ব্যক্তি অধিকার আমি কাকে ভোট দেব, আদৌ দেব কিনা... এটা কেউ ঠিক করে দিতে পারে না... টিএমসি আগে থেকে ঘোষণা দিয়েছিল, ঘরছাড়া করবে... চ্যালেঞ্জ করে সংযুক্ত মোর্চার হয়ে প্রচার করেছিলাম... তাই রাগ ছিল... ঘর ভাঙচুর করেছে।


বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার পর, নিজের এলাকায় একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন আনিস। অভিযোগ, তার জন্য, আনিসের বাড়িতে চড়াও হয়ে হুমকি দেয় তৃণমূলের লোকজন। ফেসবুক লাইভে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মালেক খাঁ এবং পঞ্চায়েত উপপ্রধান হাসেম আলি খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি।  


স্কুলে রক্তদান শিবির করার জন্য প্রধান শিক্ষিকার অনুমতি নিয়েছিলেন আনিস খান। ফেসবুক লাইভে তিনি দাবি করেন, তৃণমূল নেতাদের অনুমতি না নেওয়ায় শাসানির মুখে পড়তে হয় তাঁকে। 


ফেসবুক লাইভে আনিসের মুখে যাঁদের নাম শোনা গেছে, সেই তৃণমূল নেতারা অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। তৃণমূল নেতা ও কুশবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত উপপ্রধান হাসেম আলি খান বলেছেন, ক্লাবের নাম না দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। এক্ষেত্রে তাঁর কোনও ব্যাপার ছিল না। 
তৃণমূল বুথ সভাপতির ছেলে মাসুদ খাঁ বলেছেন, এই গণ্ডগোল পাড়ার গণ্ডগোল ছিল। এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই।


অন্যায় দেখলে বিচার চাইতে দ্বিধা করতেন না আনিস। মৃত্যুর পর তিনি বিচার পাবেন তো?