কলকাতা: আপাতত দিল্লির তিহাড় জেলেই (Tiar Jial) থাকতে হচ্ছে অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal)। আসানসোল জেলে স্থানান্তরণের যে আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি, তা খারিজ হয়ে গেল আদালতে (Cattle Smuggling Case)।  অনুব্রতর আবেদন খারিজ করল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। আদালত জানিয়েছে, অনুব্রতর আবেদন ভিত্তিহীন। অনুব্রতর স্থানান্তরণ আবেদনের বিরোধিতা করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ED)। 


শরীর ভাল যাচ্ছে না বলেও আদালতে জানান অনুব্রত


তিহাড় থেকে আসানসোল জেলে ফিরতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুব্রত। তাঁর দাবি ছিল, গরুপাচার মামলায় মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। তাঁর শরীর ভাল যাচ্ছে না বলেও আদালতে জানান অনুব্রত। তাঁকে জামিন দিলে ভাল হয় বলেও জানান। তারই সঙ্গে আসানসোল জেলে ফিরতে চেয়ে আবেদন জানান অনুব্রত। আদালতে কাতর আবেদনে বলেন, "আসানসোলে ফিরিয়ে দিন আমাকে।"


সেই নিয়ে গত ২৭ এপ্রিল বিচারক জানান, অনুব্রতর কথা শুনেছেন তিনি। কিন্তু মুখের কথা অর্থহীন। কারণ আদালতের কাছে শুধুমাত্র কাগজেরই মূল্য় রয়েছে। অনুব্রতর বিষয়টি আদালত দেখছে বলেও জানানো হয়।  তবে বৃহস্পতিবার শুনানি শুরু হলে, অনুব্রতর আবেদন খারিজ হয়ে যায় আদালতে। অনুব্রতকে আদালতে ফেরানোর তীব্র বিরোধিতা করে ইডি। 


আরও পড়়ুন: Recruitment Corruption: আদালতের ভর্ৎসনার পরই SSC মামলায় প্রথমবার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড CBI-এর


অনুব্রতকে আসানসোলে ফেরানোর তীব্র বিরোধিতা করে ইডি। আগেও এ নিয়ে বার বার আপত্তি জানিয়েছিল তারা। ইডি-র আইনজীবী আদালতে বলেছিলেন, "তিহাড়কেই নিজের ঘরবাড়ি ভাবতে শুরু করুন। আগামী তিন-চার বছর তিহাড়েই থাকতে হবে আপনাকে।" কোন জেলে রাখা হবে, তা ঠিক করার এক্তিয়ার অভিযুক্তের নেই বলেও আদালতে সওয়াল করেছিল ইডি।


এই গরুপাচার মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও। তাঁকেও তিহাড় জেলেই রাখা হয়েছে। সেখানে মহিলাদের কুঠুরিদের রয়েছেন সুকন্য়া। মেয়েকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অনুব্রত। সুকন্যাকে গ্রেফতার করা অন্য়ায় হয়েছে বলে জানান। সুকন্য়াও জানান যে, গোটা বিষয়ে কিছুই জানা নেই তাঁর।  খামোকা তাঁকে টানা হচ্ছে। 


আর্থিক লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন অনুব্রত-কন্যা!


যদিও তদন্তকারীদের দাবি, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন সুকন্যা। আর্থিক লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন অনুব্রত-কন্যা। ইডি-র দাবি, তদন্তে দেড়শো-দু’শো ব্যাঙ্কে নগদ জমার রসিদ মেলে। টাকার অঙ্ক ছিল ১০ কোটির বেশি, যা নগদে জমা পড়েছে। ইডি-র দাবি, অনুব্রতর পরিচারক, রাঁধুনি, সুকন্যার গাড়ি চালকরা বিভিন্ন সময়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা করেছেন। কে টাকা পাঠিয়েছেন জানতে চাইলে, তাঁরাই সুকন্যার নাম নেন। ইডি সূত্রের খবর, তথ্যপ্রমাণ দেখালেও সুকন্য়া জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। বার বার দাবি করেন, সব জানেন বাবা আর তাঁদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি। ইডি-র দাবি, সুকন্যার দাবি যে ঠিক নয়, তা জানান অনুব্রত-ঘনিষ্ঠরাই।