কলকাতা: কেষ্টর কুকথা কাণ্ডে এবার ডিজিপিকে চিঠি দিল জাতীয় মহিলা কমিশনের। যেখানে তারা উল্লেখ করেছে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় ভাঙবে পুলিশের মনোবল। নেওয়া হোক কড়া পদক্ষেপ। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট তলব করেছে NCW।

অনুব্রত মণ্ডলের কদর্য হুমকিকাণ্ডে এবার জল গড়াল দিল্লি অবধি।  DGP-কে চিঠি দিল জাতীয় মহিলা কমিশন। বোলপুর থানার IC-কে কদর্য হুমকি দিতে গিয়ে, রাজ্য় পুলিশের ডিজির নাম করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। ভাইরাল হয়েছে অডিও ক্লিপের সেই অংশও। এই ঘটনায় এবার  DGP রাজীব কুমারকেই চিঠি দিল জাতীয় মহিলা কমিশন। চিঠি পাওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্য়ে তদন্ত কোথায় দাঁড়িয়ে এবং অ্য়াকশন টেকেন রিপোর্ট দিতে বলল কমিশন।

অডিও ক্লিপে বোলপুর থানার IC-র পরিবার তুলে কদর্য মন্তব্য় করতে শোনা গেছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। এই প্রেক্ষাপটে DGP-র উদ্দেশে চিঠিতে অত্য়ন্ত জাতীয় মহিলা কমিশনের তরফে কড়া ভাষায় লেখা হয়েছে, এই অডিও ক্লিপে অনুব্রত মণ্ডলকে IC-র মা এবং স্ত্রীর উদ্দেশে অশ্লীল, নোংরা, অপমানজনক ভাষা ব্য়বহার করতে শোনা গেছে। তাঁরা দু'জনই নিরীহ নাগরিক। স্রেফ কর্তব্য়রত একজন পুলিশ অফিসারের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক রয়েছে। মহিলাদের, বিশেষত একজন সরকারি আধিকারিকের পরিবারের সদস্য়দের বিরুদ্ধে এধরনের হুমকি শুধু নৈতিক এবং সামাজিক অপমান নয়। ভারতীয় ন্য়ায় সংহিতার একাধিক ধারা অনুযায়ী গুরুতর ধর্তব্য়যোগ্য় অপরাধ। এবিষয়ে জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার বলেন, "ভাইরাল হওয়া অডিওতে অনুব্রত মণ্ডল একজন কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের মা, স্ত্রীর সম্পর্কে যে ভাষা ব্যবহার করছেন, কোনও মহিলা এটা নিচে পারবে বলে মনে হয় না। এটা শুধুমাত্র মেয়েদের কাছে অপমান, লাঞ্ছনা বা অসম্মান নয়। এখানে নিরাপত্তার প্রশ্নও উঠছে, একজন রাজনৈতিক নেতার যদি পুলিশ অফিসারের পরিবারের প্রতি এমন ব্যবহার হয়। 

এই ভাইরাল অডিও সামনে আসার ছ'দিনে অনুব্রত মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদটুকুও করেনি পুলিশ। সাতদিনের মাথায় অনুব্রত মণ্ডল পুলিশের কাছে হাজিরা দিয়েছেন। কিন্তু, তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করেনি পুলিশ। এই প্রেক্ষাপটে DGP-র উদ্দেশে চিঠিতে জাতীয় মহিলা কমিশন লিখেছে, জনমানসে প্রবল ক্ষোভ তৈরি হওয়া সত্ত্বেও, এবিষয়ে রাজ্য় পুলিশের তরফে যে নিষ্ক্রিয়তা দেখা গেছে, তাতে কমিশন অত্য়ন্ত উদ্বিগ্ন। এধরনের নিষ্ক্রিয়তা শুধু অপরাধীদের উৎসাহিত করে না, পুলিশ বাহিনীর মনোবলকে তলানিতে পৌঁছে দেয় এবং পুলিশের নিরপেক্ষতা এবং তৎপরতা নিয়ে মানুষের ভরসার জায়গাটা নাড়িয়ে দেয়।  চিঠিতে জাতীয় মহিলা কমিশন স্পষ্টই লিখেছে, বিষয়টির ওপর তারা কড়া নজর রাখছে এবং বিষয়টা যতটা গুরুত্ব দাবি করে, ততটাই গুরুত্ব দিয়ে যেন তা দেখা হয়।