কলকাতা: গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে মেয়েকেও। তা নিয়ে আদালতে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সরাসরি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন কেষ্ট। ইডি-র উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, "আপনাদের বিবেক বলে কিছু তো আছে...মেয়েকে গ্রেফতার করলেন!"


বৃহস্পতিবার দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অনুব্রত। দিল্লির আদালতে বাংলাতেই কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। মেয়েকে গ্রেফতার করায় ভোভে ফেটে পড়েন তিনি। এর পাল্টা, অনুব্রতর শরীর কেমন আছে, জানতে চান ইডি-র আইনজীবী। এ দিন আদালতে অনুব্রতর জামিনের আর্জিও খারিজ হয়ে গিয়েছে। আসানসোল জেলে ফেরত পাঠানোর আর্জিও খারিজ করেছে আদালত। ফলত, ৮ মে পর্যন্ত তিহাড় জেলেই থাকতে হবে তাঁকে। 


তিহাড় থেকে আসানসোল জেলে ফিরে আসার আর্জি জানিয়েছিলেন অনুব্রত। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে আদালতে। যদিও মেয়ের সঙ্গে জেলে সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছেন তিনি। এর পাশাপাশি আদালতে এ দিন ভর্ৎসিতও হয়েছে ইডি। সময়ে চার্জশিট জমা দিতে না পারায়, তাদের ভর্ৎসনা করে আদালত। বিচারক প্রশ্ন করেন, "এই কি আপনাদের কাজের পদ্ধতি?"


গরুপাচার মামলায় অনুব্রতর মেয়ে সুকন্যাকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। তিহাড় জেলেই ঠাঁই হয়েছে তাঁর। সেখানে মহিলাদের কুঠুরিতে রাখা হয়েছে তাঁকে। এর আগে, বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন সুকন্যা। কথা বলতে চেয়েছিলেন অসুস্থ বান্ধবী সঙ্গে। মেয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে আবেদন জানান অনুব্রতও। এ দিন তাতে অনুমোদন মিলেছে। 


এই গরুপাচার মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলও। তাঁকেও তিহাড় জেলেই রাখা হয়েছে। সেখানে মহিলাদের কুঠুরিদের রয়েছেন সুকন্য়া। আগেও মেয়েকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন অনুব্রত। সুকন্যাকে গ্রেফতার করা অন্য়ায় হয়েছে বলে জানান। সুকন্য়াও জানান যে, গোটা বিষয়ে কিছুই জানা নেই তাঁর।  খামোকা তাঁকে টানা হচ্ছে। 


আর্থিক লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন অনুব্রত-কন্যা!


যদিও তদন্তকারীদের দাবি, আর্থিক লেনদেন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন সুকন্যা। আর্থিক লেনদেনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন অনুব্রত-কন্যা। ইডি-র দাবি, তদন্তে দেড়শো-দু’শো ব্যাঙ্কে নগদ জমার রসিদ মেলে। টাকার অঙ্ক ছিল ১০ কোটির বেশি, যা নগদে জমা পড়েছে। ইডি-র দাবি, অনুব্রতর পরিচারক, রাঁধুনি, সুকন্যার গাড়ি চালকরা বিভিন্ন সময়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা করেছেন। কে টাকা পাঠিয়েছেন জানতে চাইলে, তাঁরাই সুকন্যার নাম নেন। ইডি সূত্রের খবর, তথ্যপ্রমাণ দেখালেও সুকন্য়া জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। বার বার দাবি করেন, সব জানেন বাবা আর তাঁদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট মণীশ কোঠারি। ইডি-র দাবি, সুকন্যার দাবি যে ঠিক নয়, তা জানান অনুব্রত-ঘনিষ্ঠরাই।