কলকাতা : দিলীপ ঘোষ পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে বড় ভাইরাস - এক সময় এমনটাই বলেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। সময় টা আজ থেকে ৫ বছর আগে। তখন অনুব্রত মণ্ডলের দাপটে কাঁপত বীরভূম। আক্রমণ,পাল্টা আক্রমণ। হুমকি পাল্টা হুমকি। দিলীপ, অনুব্রতর সম্পর্কটা ছিল এমনই। রাজনীতির ময়দানে আক্রমণে-প্রতি আক্রমণে কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তেন না। অনুব্রতর 'ভাইরাস' আক্রমণের পাল্টা দিলীপ বলেছিলেন, 'ঢাক বাজাবেন বলেছিলেন। আমিও ধামসা নিয়ে গিয়েছিলাম। ঢাকও বাজেনি, ধামসাও বাজাইনি। আগের থেকে আওয়াজ অনেকটাইণ কমে গেছে। ধীরে ধীরে স্পিকারের কানেকশনটাও কেটে যাবে। সেই ব্যবস্থা করব।' এরপর গঙ্গা - যমুনা দিয়ে জল বহুদূর গড়িয়েছে। আড়াই বছর তিহাড়ে কাটিয়ে বাংলায় ফিরেছেন অনুব্রত। দিলীপও আর বিজেপির রাজ্য সভাপতি নেই। সাংসদও নন তিনি। তাই কি দিলীপের সম্পর্কে সুরও বদলে গেল অনুব্রত মণ্ডলের? 

শুক্রবারই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। নিউটাউনের ফ্ল্য়াটে জীবনের নিউ চ্য়াপ্টার শুরু করছেন ৬৩ বছরের বর্ষীয়ান নেতা। বিজেপি কর্মী রিঙ্কু মজুমদারের সঙ্গে তাঁর নতুন সংসার।  এতদিন যাঁকে সবাই চিনতেন তাঁর রাগের জন্য়, তাঁর জীবনে এবার অনুরাগের ছোঁয়া। সঙ্ঘ করে আসা দিলীপ ঘোষ এবার সংসারী। আড়ম্বর না করেই বিয়েটা সারতে চেয়েছিলেন। নেমন্তন্ন করেননি রাজনীতির তারকা, মহাতারকাদের। কিন্তু অভিনন্দনের বন্যায় ভেসেছেন নব দম্পতি। শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও । আর এবার দিলীপের বিয়ের খবর পেয়ে বার্তা দিলেন অনুব্রত। বললেন, আমাকে 'শুভেচ্ছা রইল, আমাকে নিমন্ত্রণ করলে আমি যেতাম, দিলীপদা খুব ভাল লোক'। একদা অহি-নকুল সম্পর্ক ছিল দুই রাজনৈতিক নেতার । আর এখন তাঁকেই ভাল লোক বলে শুভেচ্ছা জানালেন অনুব্রত। একেই বোধ হয় বলে সময়ের প্রলেপ। 

বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে তৃণমূল ও বিজেপি দুই দলের দুই হেভিওয়েট নেতার তরজায় সরগরম রাজ্যরাজনীতি। তবে এই আবহেই দিলীপ ঘোষের বিয়েতে শুভেচ্ছার স্রোতে মিলে গেল সব পক্ষই।  গত বিধানসভা ভোটের আগে একাধিকবার দিলীপ-অনুব্রতর বাকযুদ্ধে উত্তপ্ত হয়েছে বীরভূমের লালমাটি। কিন্তু তখন দিলীপ ছিলেন সাংসদ । আর অনুব্রতও তিহাড় ঘুরে আসেননি। এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগামী ভোটের আগে কী হয়, সেটাই দেখার।