বোলপুর: একটানা বন্দি ছিলেন দিল্লির তিহাড় জেলে। নিজে দু'বছর, মেয়ে একবছর। অবশেষে বীরভূমের বাড়িতে ফিরলেন অনুব্রত মণ্ডল এবং সুকন্যা মণ্ডল। মঙ্গলবার সকালে বীরভূমের নিচুপট্টি এলাকার বাড়িতে ফেরেন তাঁরা। সেখানে তাঁদের দেশে জয়ধ্বনি ওঠে, হয় পুষ্পবৃষ্টিও। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বোলপুর, গোটা রাস্তা অনুব্রতকে স্বাভাবিক থাকতে দেখা গেলেও, বাড়িতে ঢুকে চোখের জল ধরে রাখতে পারলেন না অনুব্রত এবং সুকন্যা। (Anubrata Mondal)
দু'বছর পর বীরভূমে ফিরে রাজনীতিতে কি আবারও সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাবে অনুব্রতকে? গত কয়েক দিন ধরেই সেই প্রশ্ন উঠে আসছে। এদিন অনুব্রতর বাড়িতে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কয়েকজনকে দেখা যায়। উপস্থিত ছিলেন পুলিশ আধিকারিকরাও। আর তাঁদের সামনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন অনুব্রত এবং সুকন্যা। (Sukanya Mondal)
অনুব্রতর বাড়িতে একটি ঘর রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনার জন্য বরাদ্দ রয়েছে। দেওয়ালে রয়েছে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি। সেখানে বসেই এতদিন নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিতেন অনুব্রত। তিনি জেলে যাওয়ার পর থেকে ওই ঘর খালিই পড়েছিল। এদিন বাড়িতে ঢুকেই সেখানে পৌঁছন অনুব্রত। নিজের চেয়ারে বসেন। টেবিলের ডানদিকে রাখা চেয়ারে এসে বসেন মেয়ে সুকন্যাও। সেখানে কথা বলতে বলতে প্রথমে কেঁদে ফেলেন সুকন্যা। দুই হাতে চোখ ঢেকে ফেলেন অনুব্রতও। অশ্রু মুছে ছলছল চোখে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁকে।
অনুব্রত এবং সুকন্যা গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে কার্যত খাঁ খাঁ করছিল নিচুপট্টি এলাকায় তাঁদের বাড়িটি। কিন্তু আজ সকাল থেকে ভিড় থিকথিক করছে তাঁদের বাড়ির সামনে। মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশ। সেই আবহেই শুভান্যুধায়ীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। বাড়ি ফিরে এদিন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। আগামী দিনে রাজনীতিতে কী ভূমিকায় দেখা যাবে তাঁকে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
তৃণমূল যদিও বরাবরই অনুব্রতর পাশে ছিল। দলনেত্রী মমতা খোদ অভিযোগ করেন যে, অনুব্রতকে ফাঁসানো হয়েছে। তাঁকে বীরের সম্মানে ফিরিয়ে আনতে হবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। আজ ঘটনাচক্রে বীরভূমে প্রশাসনিক সভা রয়েছে মমতার। রাঙাবিতানে তাঁর সঙ্গে অনুব্রতর দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনুব্রতর শরীর ঠিক নেই। তাই আজ দেখা নাও হতে পারে তাঁদের। তবে এদিন বাড়িতে ঢোকার মুখেই অনুব্রত জানিয়ে দেন, তিনি মমতাকে ভালবাসেন এবং 'দিদি'ও তাঁকে ভালবাসেন। আগের মতোই দলের পাশে, মমতার পাশে থাকবেন বলে জানান।