কলকাতা: 'অপরাজিতা' বিল বিবেচনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠালেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালকে (Governor C V Anand Bose) ধর্ষণ-বিরোধী বিল নিয়ে টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠায় বিধানসভা। স্পিকার ও আইনমন্ত্রীর বৈঠকের পর রাজভবনে পাঠানো হয় ওই রিপোর্ট। এর আগে 'অপরাজিতা' বিল নিয়ে টেকনিক্যাল রিপোর্ট না পাঠানোয় অসন্তোষপ্রকাশ করেন সিভি আনন্দ বোস। টেকনিক্যাল রিপোর্ট পেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে 'অপরাজিতা' বিল পাঠালেন রাজ্যপাল। 


টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠাল বিধানসভা: আর জি কর-কাণ্ডের আবহে সম্প্রতি বিধানসভায় পাস হয়েছে ধর্ষণ-বিরোধী বিল। এই বিল পাসের পর রাজ্যপালের সম্মতি প্রয়োজন। নিয়ম অনুযায়ী, টেকনিক্যাল রিপোর্ট ছাড়া রাজ্যপাল কোনও বিলে সম্মতি দিতে পারেন না। এর আগে রাজভবন অভিযোগ করে ধর্ষণ-বিরোধী বিলের টেকনিক্যাল রিপোর্ট পাঠানোই হয়নি। রাজভবনের তরফে আরও অভিযোগ করা হয় এটা প্রথমবার নয়, বিভিন্ন বিলের ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল রিপোর্ট না পাঠিয়ে পরে রাজভবনের ঘাড়ে বিল আটকে রাখার দায় চাপানো হয়। নিজেদের গাফিলতি ঢাকতে সরকার সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। যা নিয়ে বিরক্ত রাজ্যপাল। অপরাজিতা বিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও কেন রাজ্য সরকার হোমওয়ার্ক করেনি, কেন ওই রিপোর্ট বিলের সঙ্গে পাঠানো হয়নি, তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। রাজভবন সূত্রে খবর, ধর্ষণ-বিরোধী বিলটিরও সমালোচনা করেছেন রাজ্যপাল। তাঁর মতে, এই বিল আসলে অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং অরুণাচল প্রদেশের আনা বিলের অনুকরণ। এই ধরনের বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। রাজভবন সূত্রে খবর, অপরাজিতা বিল নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ধর্নার হুমকি দিচ্ছেন। যা রাজনৈতিক চমক ছাড়া আর কিছুই নয় বলে মনে করেন রাজ্যপাল। 


কী রয়েছে এই বিলে?


ভারতীয় ন্য়ায় সংহিতা ও ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায় যৌন নির্যাতন, ধর্ষণ ও গণধর্ষণ সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে, বাংলার ক্ষেত্রে, সেই আইনে কিছু সংশোধনী আনা হচ্ছে। দ্রুত বিচারের জন্য় শুধু বাংলার ক্ষেত্রে কয়েকটি ধারা যোগ করা হচ্ছে এই বিলে। নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে রাজ্য়ে নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করার জন্য় বেশকিছু বিধি যুক্ত করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, এই বিলে দ্রুত বিচারের বিধানের পাশাপাশি প্রত্য়েক জেলায় বিশেষ আদালত ও অপরাজিতা টাস্ক ফোর্স তৈরির সংস্থান রাখা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত শেষ করার জন্য় এই তদন্তকারী দলকে বিশেষ তদন্তকারী অফিসার ও রাজ্য় সরকার যাবতীয় সাহায্য় করবে। এই বিলে বলা হয়েছে, চার্জশিট জমা দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্য়ে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

ভারতীয় ন্যায় সংহিতার মূল আইনে যেখানে আর জি করকাণ্ডের মতো গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে বিচার শেষ করার সময়সীমা ১ মাস রাখা আছে, এই বিলে ১ সপ্তাহের মধ্য়ে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে বলা আছে। মূল আইনে এক বছরের মধ্য়ে শাস্তি দেওয়ার কথা বলা ছিল, রাজ্য সরকারের সংশোধনী বিলে সেটা সংশোধন করে ১ মাসের মধ্য়ে করার সংস্থান রাখা হচ্ছে। মূল আইনে কোনও থানায় ঘটনা নথিভুক্ত করার পর ২ মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করার কথা বলা আছে। সংশোধনী বিলে সেটি ২১ দিনের মধ্য়ে করতে হবে। যদি কোনও ক্ষেত্রে দেখা যায় ২১ দিনে তদন্ত শেষ করা গেল না তখন এই তদন্তকারী সংস্থাকে অতিরিক্ত ১৫ দিন সময় দেওয়া যাবে। তবে সেটা দিতে পারবেন পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কেউ।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  


আরও পড়ুন: R G Kar Protest: রাত দখলের পর এবার ভোর দখলের ডাক