পার্থপ্রতিম ঘোষ, উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় ও সমীরণ পাল, বেলঘরিয়া: টালিগঞ্জের পরে অর্পিতার বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাটেও টাকার পাহাড়। অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হল ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। একইসঙ্গে ৬ কেজির বেশি সোনা উদ্ধার। ১৮ ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় এই বিপুল পরিমাণ টাকা। সূত্রের খবর, সবই পাঁচশো টাকা এবং দু'হাজার টাকার নোট। রাতভর গণনা শেষে এদিন ভোরে ১০টি ট্রাঙ্ক নিয়ে যাওয়া হয় ফ্ল্যাটে। বৃহস্পতিবার সকালে নামিয়ে আনা হয় ট্রাঙ্কগুলি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে ট্রাক ভর্তি করে সেই টাকা নিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা।
বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধার: আবার যকের ধন। দক্ষিণের পর এবার উত্তরেও টাকার পাহাড়। নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় ধৃত, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট থেকে টাকা উদ্ধারের পর যে প্রশ্নটা জোরাল হয়ে উঠছে, তা হল--- এটা কি স্রেফ হিমশৈলের চূড়া? আরও কত টাকা লুকোনো আছে? আরও কত উদ্ধার হবে? টালিগঞ্জের মতো বেলঘরিয়াতেও দেখা গেল, ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে রাশি রাশি ২ হাজার এবং পাঁচশোর নোটের বান্ডিল। এমনকী শৌচাগারেও মেলে টাকা।
এতদিন এরকম দৃশ্য সাধারণত দেখা যেত বলিউডের ছবিতে। কিন্তু, এবার চিত্রনাট্যকে হার মানাচ্ছে বাস্তব। রিলকে ছাপিয়ে যাচ্ছে রিয়েল। শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির তদন্তে, ইডি একেকটা ফ্ল্যাটে হানা দিচ্ছে, আর উদ্ধার হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। কিন্তু, এই টাকা কি অর্পিতার একার হওয়া সম্ভব? কে টাকা রাখতে দিয়েছিলেন অর্পিতাকে? অর্পিতার ফ্ল্যাট কি টাকা লুকনোর জায়গা হিসাবে ব্যবহৃত হত? যকের ধনের আসল মালিক কে? মূল চাঁই কে? কিংপিন কে? কানে টান পড়ার পর কি মাথা আসবে? শুধুই কি চাকরি বিক্রির টাকা? না কি আরও দুর্নীতির টাকা?
এবিপি আনন্দই প্রথম বেলঘরিয়ায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট খুঁজে বার করে। বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার ভোর রাত- ১৮ ঘণ্টা তল্লাশির পর সেই ফ্ল্যাট থেকেই উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা ও কেজি কেজি সোনার বাট। তারই সঙ্গে সঙ্গে রাশি রাশি দলিল। ইডি সূত্রে দাবি, টালিগঞ্জের ফ্ল্যাটের মতো এই ফ্ল্যাটেও একটি ঘরে অনেক ওয়ার্ড্রোব রয়েছে। সেই ওয়ার্ড্রোবগুলি খুলতেই দেখা যায়, তার ভিতরে থরে থরে সাজানো দু’হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল। ইডি সূত্রে দাবি, একটি-দু’টি ওয়ার্ড্রোব নয়, সবক’টি ওয়ার্ড্রোবেই ঠাসা ছিল নগদ টাকা! টাকা গুনতে নিয়ে আসা হয় অত্যাধুনিক মেশিন।
আরও পড়ুন: Arpita Mukherjee: চোখ কপালে পড়শিদের, ছবি তুলতে গভীর রাতেও ভিড়