কলকাতা: যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিভাগের প্রাক্তনী জয়দীপ ঘোষ বিশ্ববিদ্যালয়ে অত্যন্ত প্রভাবশালী ছিলেন। ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ। ২০২১-এর পাস আউট জয়দীপ ২০১৯-’২০ সালে আর্টসের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে যান। পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা জয়দীপ বর্তমানে বিক্রমগড়ে ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। জয়দীপ ওইদিন কী করছিলেন যাদবপুরের হস্টেলে? কার ফোন পেয়ে তিনি হস্টেলে গিয়েছিলেন? জানতে চাইছে পুলিশ। 


পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার দিন তিনি হস্টেলে যান। ওইদিন মেন হস্টেলের গেট বন্ধ করা ও পুলিশকে বাধা দেওয়ার ঘটনায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন জয়দীপ। তথ্যপ্রমাণ পেয়েই ওই প্রাক্তনী ও অন্য়ান্যদের বিরুদ্ধে FIR দায়ের করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ছাত্র পড়ে যাওয়ার পর হস্টেলে জিবি মিটিংয়েও হাজির ছিলেন জয়দীপ। আবাসিক না হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী বিক্রমগড়ের ভাড়াবাড়ি ছেড়ে ওইদিন কেন হস্টেলে গিয়েছিলেন, তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাহলে ছাত্র হেনস্থার ঘটনাতেও কি যোগ রয়েছে জয়দীপের? ওই দিন সন্ধে থেকেই কি তিনি হস্টেলে ছিলেন? উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। যাদবপুরের এই প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে কর্তব্যরত পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটির জিজ্ঞাসাবাদে জয়দীপের বক্তব্যে অসঙ্গতি ধরা পড়ে।


যাদবপুরে ছাত্রের মৃত্যু বহু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে চাঞ্চল্যকরভাবে সবকিছুর নেপথ্যে সম্মিলিত ষড়যন্ত্রের তত্ত্বও উঠে এসেছে। যার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েরই ১৩ জন বর্তমান ও প্রাক্তন পড়ুয়ার নাম। পুলিশকে হস্টেলে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হয় জয়দীপ ঘোষ নামে যাদবপুরের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক প্রাক্তনীকে। শুক্রবার যাদবপুরকাণ্ডে যে ৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে, তাঁদের মধ্যে সত্যব্রত রায় কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। শেখ নাসিম আখতার রসায়নের বিভাগের প্রাক্তনী এবং হিমাংশু কর্মকার অঙ্ক নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। শনিবার তাঁদের আলিপুর আদালতে পেশ করে, সরকারি আইনজীবী দাবি করেন, প্রত্যেকে অভিনয় করে, তদন্তের অভিমুখকে বদলে দেওয়া চেষ্টা করেছেন। এমনকী, ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময়ও একই কাজ করে গেছেন তাঁরা। প্রত্যেকেই সফল অপরাধী! কিন্তু ব্যর্থ অভিনেতা। হিমাংশু, নাসিম এবং সত্যব্রত-কে ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।

পুলিশ সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল যে,তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে, অভিযুক্তরা, বারবার শিখিয়ে দেওয়া বুলিই আওড়ে গিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে আরও দাবি, ৯ অগাস্ট রাতে ৩ জনই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ছাত্রের মৃত্য়ুর পর জিবি মিটিংয়েও ছিলেন এই ৩ জন। হিমাংশু আহত ছাত্রকে নিয়ে ট্যাক্সিতে করে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজেও যান। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ভোরে ছাত্রের মৃত্যুসংবাদ পেতেই, হিমাংশু এবং নাসিম তল্পিতল্পা গুটিয়ে হস্টেল ছেড়ে চলে যান। এই বিষয়টি জানার পর, তদন্তকারীদের সন্দেহ জোরাল হয়। এদিকে যাদবপুরে পড়ুয়ার মৃত্যু নিয়ে শনিবার  কলকাতা হাইকোর্টে আরও ১টি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলায় CBI, NIA এবং NCB-কে যুক্ত করার আবেদন জানিয়েছেন যাদবপুরের প্রাক্তন ছাত্র ও গবেষক অভ্র সেন।


আরও পড়ুন:  North 24 Parganas Weather: রোদ ঝলমলে আকাশ, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির পূর্বাভাস উত্তর ২৪ পরগনায়