কলকাতা: বাংলা ক্রমশ কাশ্মীরে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছিলেন কেউ। কেউ আবার সরাসরি দাবি তুলেছিলেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করানোর। জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে মাথাচাড়া দেওয়া অশান্তির সঙ্গেও তুলনা টেনেছিলেন কেউ কেউ। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলার পরিণতি বলেও জল্পনায় ইন্ধন জোগান। কিন্তু দ্বিতীয় বার ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে’ হামলার ঘটনায় কার্যতই ভ্রান্ত প্রমাণিত হল বঙ্গ বিজেপি নেতাদের অভাব-অভিযোগ। বাংলায় নয়, দ্বিতীয় বার বিহারে ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এ হামলা হয় বলে জানিয়ে দিল কেন্দ্রীয় সরকারের রেল মন্ত্রকই।
‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’-এর ওপর দ্বিতীয় বার হামলার ঘটনায় নিজেদের মতো করেই তদন্ত শুরু করে রেল পুলিশ। তার পর সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখা হয়। তাতে দেখা যায়, হাওড়া থেকে বিহার হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি যাওয়ার পথে হামলা হয় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে। তবে এই হামলা হয় বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলায়, মানগুর্জন স্টেশন থেকে একটু এগিয়ে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, গত ৩ জানুয়ারি বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলায় বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে লক্ষ্য করে চলে হামলা। বাইরে থেকে ছোড়া হয় পাথর। তাতে সবে উদ্বোধন হওয়া ট্রেনের দুই কোচের জানলার কাচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, “বিহার বাংলা বর্ডারে এই ঘটনা ঘটে। নিউ জলপাইগুড়ি ঢোকার আগে এই হামলা হয়। সময় ছিল ১২.৫৫। এই সময় ট্রেনের বিহারেই থাকার কথা। এই ঘটনার তদন্ত হবে। কাউকে ছাড়া হবে না। যাঁরা এই বহুমূল্য ট্রেনের টিকিট কেটে সফর করছেন, আনন্দ উপভোগ করছেন, তাঁদের বিঘ্ন করা বরদাস্ত হবে না।”
আর তাতেই গত কয়েক দিন ধরে বিজেপি নেতাদের যাবতীয় দাবি-দাওয়া এবং হুঁশিয়ারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তাতে বাংলার বিজেপি নেতাদের মুখ পুড়ল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ গত কয়েক দিনে নানা মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে বাংলার বিজেপি নেতাদের। “বাংলা ভাল কিছু পাওয়ার যোগ্য নয়” বলে মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি-র সর্বভারতীয় নেতা দিলীপ ঘোষকে আবার বলতে শোনা যায়, “বাংলা ধীরে ধীরে কাশ্মীর হয়ে যাচ্ছে”। তৃণমূলকে “বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া দল” বলে কটাক্ষ করেন শুভেন্দুও। কিন্তু শেষ মেশ দেখা গেল, বাংলায় নয়, দ্বিতীয় বার বিহারেই হামলা হয়েছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উপর। তাই বিষয়টি সামনে আসার পরই এ দিন মমতা বলেন, “বন্দে ভারতে পাথর ছোড়ার ঘটনায় বাংলাকে বদনাম করা হয়েছে।”