পার্থপ্রতিম ঘোষ, মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক গাঁতাইত, আসানসোল: কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু মামলায় জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে গ্রেফতার করার প্রতিবাদে পথে নামল বিজেপি। আসানসোলে বিজেপি নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদ মিছিল।


পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ: কম্বলকাণ্ডে জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আসানসোল আদালত। আদালতে নিজের হয়ে নিজেই সওয়াল করলেন ধৃত বিজেপি নেতা। ২০২৪-এ আসানসোলের মানুষ জবাব দেবে। বললেন জিতেন্দ্র। বিশৃঙ্খলা তৈরি করে পালিয়ে গেছিলেন কেন? পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন কুণাল ঘোষ।


বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ: বিজেপিশাসিত উত্তর প্রদেশের নয়ডা থেকে গ্রেফতার থেকে আদালতে তোলার সময় বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের পাশাপাশি, বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির গ্রেফতারির নিয়েও সরগরম থাকল বঙ্গ রাজনীতি! গত বছরের ১৪ই ডিসেম্বর, আসানসোল পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর জিতেন্দ্র পত্নী চৈতালি তিওয়ার উদ্যোগে কম্বল বিতরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়।  শুভেন্দু অধিকারী, জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ বিজেপির একাধিক নেতা সেখানে উপস্থিত হন। পরে ওই অনুষ্ঠানেই পদপিষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। 


সেই ঘটনায় নয়ডায় গ্রেফতারির পর, শনিবার রাতে কলকাতায় আনা হয় আসানসোলের প্রাক্তন মেয়রকে। রাত ২টো নাগাদ আসানসোল উত্তর থানায় জিতেন্দ্রকে নিয়ে পৌঁছয় পুলিশ। রবিবার সকাল সোয়া নটা নাগাদ, থানা থেকে বিজেপি নেতাকে বের করা হয়, আসানসোল আদালতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তখন বাইরে বিক্ষোভ স্লোগান দেখান বিজেপি কর্মীরা। 
ধৃত জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধে, ৩০৪-এর ২ ৩০৮ এবং ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।


তাঁকে ১৪ দিন হেফাজতে চেয়ে, আদালতে আর্জি জানায় পুলিশ। নিজেই নিজের জন্য সওয়াল করলেও, জামিনের আর্জি জানাননি জিতেন্দ্র। তিনি বলেন, তাঁকে যেন ২ দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয় কারণ, তিনি আগাম জামিনের আর্জিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। সোমবার তার শুনানি রয়েছে। পাল্টা সরকারি আইনজীবী বলেন, জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখা প্রয়োজন। কারণ, অনেক সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছে। তাই ওঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন। গ্রেফতারির পর আর আগাম জামিনের মামলার মূল্য থাকে না। বিচারক জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।


তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলছেন, মাঝে তিনি এই ব্যাপারটা নিয়ে একাধিকবার আইনি নানা জটিলতা সৃষ্টি করেছিলেন জিতেন্দ্র। তাই এই বিলম্ব। তদন্ত সাড়া দিচ্ছিলেন না সহযোগিতা করছিলেন না মাঝে। বদলার রাজনীতি নিয়ে ফিল্মের ডায়লগ অন্য জায়গায় দেখাবেন। পালিয়ে কি অপরাধ করেছেন।


এদিন আদালত চত্বরেও বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা।  জিতেন্দ্রর গাড়ির সামনেও বসে পড়েন কয়েকজন। পুলিশ তাঁদের সরাতে গেলে, তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।  জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে নিয়ে থানার দিকে রওনা দেয় পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশ কিছু প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষ করতে ভুলে যাওয়ায় মিনিট দশেক পর ফের জিতেন্দ্রকে ফিরিয়ে আনা হয় আদালতে। এ প্রসঙ্গে ধৃত জিতেন্দ্র তিওয়ারির বক্তব্য, আমি সাধারণ কর্মী, আমি জেলে বা পুলিশের লকআপে থাকতে পারি, কিন্তু যারা গদিতে বসে আছে, তাদের অবস্থা ভাবুন। জিতেন্দ্রকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে এদিন আসানসোল স্টেশন থেকে আসানসোল উত্তর থানা পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি।