কৃষ্ণেন্দু অধিকারী , উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : পর্যটন দফতর হাত বদলের পর, এবার একেবারে সামনে চলে এল বাবুল সুপ্রিয় এবং ইন্দ্রনীল সেনের ( Indranil Sen ) টানাপোড়েন। ক্য়ামেরার সামনেই পরস্পরকে বিঁধলেন দুই গায়ক মন্ত্রী। বাবুলের ( Babul Supriyo) বক্তব্য়, 'যে টেবিলে বসলে সম্মান থাকে না, সেই টেবিল ছেড়ে আমি চলে যাই।' আর কটাক্ষের সুরে ইন্দ্রনীল বলছেন, 'ও বাচ্চা ছেলে! সবে দলে এসেছে! আমরা চেষ্টা করব, ওকে নিজের মতো রাখতে। ' 


যাঁরা সুর নিয়ে খেলতে অভ্য়স্ত, তাঁদের মধ্য়েই এখন সম্পর্কের তাল কেটেছে! আর বাবুলের হাত থেকে পর্যটন দফতর ইন্দ্রনীল সেনের হাতে যাওয়ার পরই তৃণমূলের দুই মন্ত্রীর বাগযুদ্ধ একেবারে সামনে চলে এল! তথ্য়প্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, ' আমি শান্তিতে দিনের শেষে গান গাইতে চাই! কোনও মনোমালিন্য হয়নি এটা বললে বোঝাবে, কাকে বোকা বানাচ্ছি! মনের কথা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। বাদানুবাদ, মনোমালিন্য সর্বজনবিদিত। আমার ব্যক্তিগত মত মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম।' 


অধুনা পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলছেন, ' আমার কাজ গান গাওয়া। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, (Mamata Banerjee) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যা  বলবেন, তার ডেলিভারি করা। আগামী দিনে নিশ্চয়ই এ ধরনের বিতণ্ডা ও করবে না। শুধু আমার সঙ্গে নয়, সবার সঙ্গে।  আর, বিতণ্ডা কখন হয়?  যখন কেউ রেসপন্স করে। আমি তো করিনি! ' 


বিধানসভার করিডরের তপ্ত আলোচনা থেকে থেকে সোশাল মিডিয়ার পোস্ট,.তিক্ততা ক্রমেই বেড়েছে। এখন বাবুল বলছেন, 'বাদানুবাদ, মতানৈক্য সবার সামনে হয়েছিল। এই অমর্যাদাকর  পরিস্থিতিতে পার্টির পুরোধা হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী যে রাস্তা দেখিয়েছেন, সেখানে আছি'


আর ইন্দ্রনীল সেন বলছেন, ' ও অনেক কিছু বলেছিল। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেও বলেছিল। আমি শুধু রবীন্দ্রনাথের কথায় বলি, যে তোরে পাগল বলে তারে তুই বলিস নে কিছু!' 


পাল্টা মন্তব্য করেছেন বাবুলও। বলেছেন, ভালো ফিল্মের খারাপ গান কে হিট হতে দেখেছি! আবার ভালো গান কে ফ্লপ হতেও দেখেছি! রিলেতে যা দেখানো হয়, রিয়েলে সব সময় তা হয় না। ঘর্ষণ যত কম হবে, মেশিনের এফিসিয়েন্সি তত বাড়বে... কোনও মন্ত্রিত্ব সর্বকালীন হতে পারেনা। পর্যটনের সেরা টা দিয়েছিলাম। দল যে ব্যাটিং অর্ডার দেবে, এখন  সেখানেই সেরাটা দিতে চাই।' 


ইন্দ্রনীলের জবাব, ' ও কী বলল, আমি লিস ইন্টারেস্টেড! আমি অন্যের কাজে কোনদিন ইন্টারফেয়ার করিনি। করবোও না। আমি পর্যটন দফতর চাইনি, অন্য কোন দফতরও চাইনি। মনে করেছেন মুখ্যমন্ত্রী তাই দিয়েছেন। যতদিন চাইবেন কাজ করব!' 

আর দুই মন্ত্রীর টানাপোড়েনের মাঝে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য় করেছেন মদন মিত্র। 'আমি তো এমনি ভাল আছি। মন্ত্রিসভা মানেই তো আবার সেই চাপ, আবার দৌড়োদৌড়ি। তার থেকে রিটায়ারমেন্ট লাইফ ভাল কাটাচ্ছি।' 


তৃণমূলের অন্দরে মন্ত্রিত্ব নিয়ে এই অসন্তোষের জল আরও কতদূর গড়াবে? সেটাই দেখার।