পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: ঘর বাইরে থেকে বন্ধ। অথচ ঘর থেকে বেরিয়ে আসছে কালো ধোঁয়া। দরজা ভাঙতেই পাওয়া যায় বৃদ্ধার অগ্নিদগ্ধ দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার দুপুরে পাটুলি থানা এলাকার বাঘাযতীনের একটি ফ্ল্যাটে।

টাকার জন্যই ছেলের হাতে খুন হয়েছেন বাঘাযতীনের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষিকা? পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত মালবিকা মৈত্রর অ্যাকাউন্ট থেকে সোমবার সাড়ে ৯ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার হয়েছিল ছেলের অ্যাকাউন্টে। ছেলের অ্যাকাউন্টে এখন ১৯ লক্ষ টাকা আছে। দেখা যাচ্ছে, মাঝেমধ্যেই মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা ট্রান্সফার হয়েছে ছেলের অ্যাকাউন্টে। কিন্তু কেন? সেটাই এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। বেপাত্তা ছেলে। ৭২ বছরের মালবিকা মৈত্র দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী স্কুলের প্রাক্তন  শিক্ষিকা। তাঁর ছেলে বেসরকারি ব্যাঙ্কের কর্মী।                         

কিছুদিন আগে অস্ত্রোপচার হওয়ায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। গতকাল  বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনির ভাড়ার ফ্ল্যাটে তাঁর আধপোড়া দেহ মেলে। মুখে বালিশ চাপা দেওয়া ছিল। তবে কি শ্বাসরোধ করে দেহ পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল? কারণ জানতে আজ বৃদ্ধার দেহের ময়নাতদন্ত হবে। 

সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থলে যেতে পারেন কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিভাগের গোয়েন্দারা । ফলে বাইরে থেকে কোনও লোকজন যাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছতে না পারে, তথ্যপ্রমাণ যাতে ঘেঁটে না যায়, তার জন্য এলাকাটি ঘিরে রাখা হয়েছে । ঘরের বাইরে বসানো হয়েছে পুলিশ পিকেট । তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে এদিন দুপুরবেলা পোড়া গন্ধ বের হচ্ছিল ওই ফ্ল্যাট থেকে । বেশ কয়েকবার দরজা ধাক্কা দিলেও কেউ দরজা খোলেননি । যেহেতু দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল ফলে এলাকার বাসিন্দারা প্রথমে খবর দেয় পাটুলি থানায় । তবে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসার আগেই আগুন অনেকটাই ছড়িয়ে পড়ে ।

সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকলকে । আগুন কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করে দরজা খুললে দেখা যায়, ওই বৃদ্ধা মেঝেতে পড়ে রয়েছেন । অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁকে।

ঘটনার তদন্তে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে পুলিশ কথা বলে গোটা বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করছে । কিন্তু কী থেকে আগুন ধরল কিংবা আগুন লাগানো হল কি না, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয় । পরীক্ষার পরেই আগুন লাগার সঠিক কারণ জানা যাবে।