করুণাময় সিংহ, মালদা: মালদাকাণ্ডে (Malda) ৪ পুলিশ আধিকারিককে ক্লোজ করা হল। ৯ দিনের মাথায় অবশেষে পদক্ষেপ নিল প্রশাসন। ৪ পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ করলেন পুলিশ সুপার (West Bengal)। গত ১৮ জুলাই বামনগোলায় (Bamonglay) চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে জুতোপেটা করার অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টে নালাগোলা ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় নির্যাতিতাদেরই গ্রেফতার করে পুলিশ। যদিও ঘটনার দিন তারা ফাঁড়ির এলাকায় যাননি, ভাঙচুরেও যুক্ত ছিলেন না বলে দাবি করেন তাঁরা। ৭ দিন পর জামিন পান ২ নির্যাতিতা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।


এক সারিতেই মণিপুর আর মালদা? যখন মণিপুরের (Manipur) দুই মহিলাকে গণধর্ষণের পর বিবস্ত্র করে ঘোরানোর ভাইরাল ভিডিও (Viral Video) নিয়ে তোলপাড় পড়ে গেছে গোটা দেশ! ঠিক তখনই লজ্জার ছবি সামনে এসেছিল মালদার বামনগোলাতেও! সেখানেও চোর সন্দেহে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে মারধর, জুতোপেটা এবং তারপর মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতারও করা হয়। সেই ঘটনার ৯ দিনের মাথায় অবশেষে পদক্ষেপ করল মালদা জেলা পুলিশ। বামনগোলা থানার আইসি-সহ মোট চারজন পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ করা হল জেলা পুলিশ লাইনে। 


ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন? সম্প্রতি হাটে লেবু বিক্রি করতে গেছিলেন দুই মহিলা। অভিযোগ, তখনই এক মহিলার টাকার ব্য়াগ চুরির অভিযোগে তাঁদের বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করা হয়। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন ২ সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযোগ এই দুই মহিলাদের রক্ষা করতে কোনও পদক্ষেপ করেনি তারা। প্রশ্ন ওঠে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। এর পর উল্টে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দুই নির্যাতিতাকেই গ্রেফতার করে পুলিশ। সাতদিন জেলবন্দি থাকার পর, মঙ্গলবার ছাড়া পান দুই নির্যাতিতা।


কী পদক্ষেপ প্রশাসনের? দুটি ঘটনাতেই ডিএসপি পদমর্যাদার এক অফিসারকে তদন্তভার দেওয়া হয়। এর পরই আজ চার পুলিশ অফিসারকে ক্লোজ করার সিদ্ধান্ত নিলেন মালদার পুলিশ সুপার।  ক্লোজ করা হয়েছে বামনগোলা থানার আইসি জয়দীপ চক্রবর্তীকে। তাঁর জায়গায় নতুন আইসি করা হয়েছে শঙ্কর সরকারকে। 


এ ছাড়াও বামনগোলা থানার এসআই সঞ্জয় সরকার পাকুয়াহাট পুলিশ ফাঁড়ির ওসি রাকেশ বিশ্বাস  এবং পাকুয়াহাট ফাঁড়ির এএসআই মিলনকুমার সরকারকেও ক্লোজ করেছেন পুলিশ সুপার। পুলিশ সূত্রে দাবি, দুই মহিলার ওপর নির্যাতনের সময় তাঁদের বাঁচানোর জন্য যা করা উচিত ছিল, তা করেননি পাকুয়াহাট ফাঁড়ির এএসআই। বাকি তিনজন পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দুই নির্যাতিতাকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ রয়েছে। 


সকলের বিরুদ্ধেই শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। দুই নির্যাতিতাকে মারধরের ঘটনায় পুলিশের রুজু করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় এখনও পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  অন্যদিকে এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই মালদার পুলিশ সুপারের থেকে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট তলব করেছে NHRC। তার মধ্যেই এবার চার অফিসারকে ক্লোজ করলেন পুলিশ সুপার। 


আরও পড়ুন: Recruitment Scam: ইডি'র নথিতে অভিষেকের নাম! কার বয়ানে ভিত্তি?


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial