মেদিনীপুর: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বন্ধ রিঙ্গার ল্যাকটেট সরবরাহ। তাই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে RL। হাসপাতালে ন্যায্যমূল্যের দোকান থেকে কেনা রিঙ্গার ল্যাকটেট স্যালাইনের বোতলে মিলল ছত্রাক! অভিযোগ, ওই স্যালাইনে নেই ব্যাচ নম্বর, এক্সপায়ারি ডেট, ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট। ঘটনাকে ঘিরে ছড়ায় উত্তেজনা । বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন রোগীর আত্মীয়রা।
একেই স্যালাইনকাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য। মা হারিয়েছে ১ দিনের শিশু। মৃত্য়ুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও ৩ প্রসূতি। এই ভয়ঙ্কর অবস্থার জন্য় দোষ কাদের? সূত্রের খবর, মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের ঘটনায়,'রিঙ্গার ল্যাকটেট' স্য়ালাইনের শুদ্ধতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে তদন্ত কমিটি। সূত্রের খবর, স্বাস্থ্য় ভবনে পেশ করা তদন্ত কমিটির ৫ পাতার রিপোর্টে বলা হয়েছে,'রিঙ্গার ল্যাকটেট' বিশুদ্ধ না হওয়াই বিপত্তির কারণ বলে তাদের সন্দেহ। রিপোর্টে বলা হয়েছে,প্রসূতিদের অসুস্থতার কারণ হিসেবে, 'RL ইনফিউশন' এবং 'অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশনে'র ভূমিকা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তদন্ত কমিটির কাছে মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গত বুধবার, ৮ তারিখ, রাত ১০টা ৫০ থেকে ভোর ৬টা ৫০, ৮ ঘণ্টায় ৭টা ডেলিভারি হয়। সূত্রের খবর, এই ৭ প্রসূতির মধ্য়ে ২ জনের ক্ষেত্রে দেখা যায়, 'রিঙ্গার ল্য়াকটেট' প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে জটিলতা শুরু হয়েছে। তারপর আরও ৩ জনকে দেওয়া হয় এই একই স্য়ালাইন। তাঁদের ক্ষেত্রেও যখন একই জটিলতা তৈরি হয়, তখন ঝুঁকি না নিয়ে বাকি ২ প্রসূতির পরিবারকে বাইরে থেকে স্য়ালাইন কিনে আনার কথা বলা হয়।
সূত্রের খবর, স্য়ালাইনকাণ্ডের তদন্তে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, যেদিন অস্ত্রোপচার হয়, সেদিন রাতে স্ত্রীরোগ বিভাগে ডিউটিতে ছিলেন একজন সিনিয়র RMO.CC ক্যামেরায় তাঁকে অপারেশন রুমে ঢুকতে দেখা গেলেও, সূত্রের দাবি, তিনি অপারেশন করেননি। অস্ত্রোপচার করেন পোস্ট গ্র্য়াজুয়েট ট্রেনিরা। মুখ্য়সচিব মনোজ পন্থ বলেন, ট্রেনি চিকিৎসকরা, ওদেরকে সবসময় সিনিয়র চিকিৎসকদের অধীনেই কাজ করতে হয়। যথাযথ ডিউটি রস্টারও মেনে চলতে হয়। প্রাথমিকভাবে দেখা যাচ্ছে, এই নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সোমবার মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের তরফে একটি নির্দেশিকা জারি হয়। সেখানে বলা হয়, PGT বা জুনিয়র চিকিৎসকরা একা কোনও সার্জারি করতে পারবেন না।
তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'রাজ্য সরকার তার তরফে থেকে তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। যদি কারও গাফিলতি এখানে পাওয়া যায় তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমরা এগুলো আগেও করেছি, দল মত নির্বিশেষে প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে।'