সমীরণ পাল, বনগাঁ: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ১২ কোটির টাকার সোনার বিস্কুট (gold biscuit) সহ একজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করল বিএসএফ (BSF)। ধৃতের বাড়ি বনগাঁ (Bangaon) থানার হালদারপাড়া গ্রামের গুনারমাঠে বলে বিএসএফ সূত্রে জানা গেছে।


বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী হালদারপাড়া গ্রামের গুনারমাঠ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালানো হয়।  দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের সীমান্ত চৌকি গুনারমাঠের ০৫ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ জওয়ানরা তাঁদের সীমান্ত চৌকি এলাকার হালদারপাড়া গ্রামে বিশেষ অভিযান চালিয়ে অলোক পালের (নাম পরিবর্তিত) বাড়ি থেকে বিভিন্ন আকারের ৮৯টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে। ওই চোরাকারবারী এই সোনার বিস্কুটগুলি বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসার পর ডেলিভারির দেওয়ার আগে নিজের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল। বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনার মোট ওজন  ১৬.০৬৭ কেজি  এবং আনুমানিক বাজার মূল্য ১২ কোটি টাকা।


দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের বিএসএফের ডিআইজি ও মুখপাত্র শ্রী এ.কে.আর্য জানান, ২৫ মে সীমান্ত চৌকি গুনারমাঠের জওয়ানরা সীমান্তবর্তী হালদারপাড়া গ্রামের একটি বাড়িতে প্রচুর চোরাই সোনার বিস্কুট মজুত রয়েছে বলে খবর পেয়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে সন্দেহজনক বাড়িটি চারদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয়। এরপর গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। তল্লাশির সময় ওই ব্যক্তি একটি কাপড়ের বেল্টে লুকিয়ে রাখা সোনার বিস্কুট সহ ধরা পড়ে। কাপড়ের বেল্ট খুললে বিভিন্ন সাইজের ৮৯টি সোনার বিস্কুট পাওয়া যায়। এরপর পরবর্তী তদন্তের জন্য ওই ব্যক্তিকে সোনার বিস্কুটগুলি সহ সীমান্ত চৌকি কল্যাণীতে নিয়ে আসা হয়।


জেরায় ধৃত ব্যক্তি জানায়, ২০২৪ সালের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে সে বাংলাদেশ থেকে একজন স্বর্ণ চোরাকারবারীর সংস্পর্শে এসেছিল। ওই চোরাকারবারী আশ্বাস দিয়েছিল যে তার সোনার চালান বাড়িতে লুকিয়ে রাখার জন্য সে তাকে প্রতিদিন ৪০০ টাকা দেবে। এই কথা শুনে ধৃত ব্যক্তি রাজি হয়ে এই কাজে যোগ দেয়। এরপর অজ্ঞাত ওই চোরাকারবারী তার বাড়িতে চোরাই সোনা নিয়ে আসতে থাকে। গত ২৫ মে রাত ১২.৪০ মিনিটের সময় ওই ব্যক্তি তাকে বাড়িতে লুকানোর জন্য ৮৯টি সোনার বিস্কুট এবং বিভিন্ন আকারের ইট দিয়েছিল। বিএসএফের জওয়ানরা এই খবর পেয়ে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তল্লাশির সময় সোনার বিস্কুট সহ তাকে আটক করে। ওই ব্যক্তি আরও জানায় যে সোনা চোরাচালানের দায়ে সে ইতিমধ্যেই এক মাস জেল খেটেছে এবং সেই মামলা এখনও বনগাঁ আদালতে চলছে। বর্তমানে ধৃত ওই চোরাকারবারী এবং বাজেয়াপ্ত সোনা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য কলকাতার রাজস্ব গোয়েন্দা পরিচালকের (ডিআরআই)কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে 


দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের ডিআইজি ও জনসংযোগ আধিকারিক  শ্রী এ.কে, আর্য বিএসএফ জওয়ানদের এই কৃতিত্বে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীমান্তে বসবাসকারী লোকদের কাছে আবেদন করেছি তাঁরা যদি সোনা চোরাচালান সম্পর্কিত কোনও তথ্য পান তবে তাঁরা যেন বিএসএফের সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর ১৪৪১৯ -এ যোগাযোগ করে এই সংক্রান্ত তথ্য দিন। সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার আরও একটি নম্বর জারি করেছে ৯৯০৩৪৭২২২৭। যাতে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজ পাঠানো যাবে। যাঁরা এই সংক্রান্ত খবর দেবেন তাঁদের উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে এবং পরিচয় গোপন রাখা হবে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: Anwarul Azim: ছোটবেলার বন্ধুই সাংসদ খুনের নেপথ্যে! কলকাতায় পৌঁছে বললেন বাংলাদেশের গোয়েন্দা প্রধান