নয়াদিল্লি: বাংলাদেশের বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২৭। এর মধ্যে ২৫ জন শিশুও রয়েছে। এবার এই ঘটনায় প্রতিবাদে সরব হয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থী তথা সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি এতটাই উত্তেজিত হয়ে ওঠে যে, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের পরিস্থিতি তৈরি হয়। ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ।
গতকাল ঢাকার উত্তরায়, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ওপর ভেঙে পড়ে বাংলাদেশ বায়ুসেনার প্রশিক্ষণ বিমান। যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে তিনতলা বিল্ডিং। মৃত্যু হয় ফ্লাইট লেফটেন্য়ান্ট মহম্মদ তৌকির ইসলামের। চিনে তৈরি বাংলাদেশের যুদ্ধবিমানে যান্ত্রিক ত্রুটিই বিপর্যয়ের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
কয়েকদিন আগেই গুজরাতের আমদাবাদে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের ওপর ভেঙে পড়েছিল যাত্রিবাহী বিমান। শুধু বিমানের যাত্রীরাই নয়, ভয়াবহ দুর্ঘটনা প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলের আবাসিক ও আশপাশের এলাকার বহু বাসিন্দার! আর এবার বাংলাদেশে ভেঙে পড়ল বিমানবাহিনীর ফাইটার জেট। ঢাকার উত্তরায়, মাইলস্টোন । স্কুল অ্য়ান্ড কলেজের বহুতলের ওপর ভেঙে পড়ল প্রশিক্ষণ বিমানটি। এদিকে মৃতের সংখ্য়া বেড়েই চলেছে! যুদ্ধবিমানটি ভেঙে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে গোটা বিল্ডিং। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। তড়িঘড়ি উদ্ধার করে আহতদেরকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও, বাঁচানো যায়নি অনেককেই।
ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে ছোট-বড় মিলিয়ে রয়েছে একাধিক বিল্ডিং। প্রশিক্ষণ বিমানটি ভেঙে পড়ে একটি তিনতলা বিল্ডিংয়ের ওপর। সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ, কুরমিটোলার এ কে খন্দকার বিমানঘাঁটি থেকে ওড়ে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর F-7 যুদ্ধবিমানটি এরপরই তাতে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা যায়। ওড়ার ১৩ মিনিটের মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসের ওপর ভেঙে পড়ে বিমানটি। মৃত্যু হয় বিমানের চালক ফ্লাইট লেফটেন্য়ান্ট মহম্মদ তৌকির ইসলামের।
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম মাধ্য়ম সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর F-7 BGI মডেলের। ২০১১ সালে চিনের সঙ্গে ১৬টি যুদ্ধবিমান সরবরাহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। ২০১৩ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে যুদ্ধবিমানগুলো চিন। বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মোট ৩৬টি এফ-৭ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই এফ-৭ বিজিআই ভ্যারিয়েন্ট।এই এফ-৭ বিজিআই মূলত বাংলাদেশের জন্যই আলাদাভাবে তৈরি করেছিল চিন।বৈশিষ্ট্য়ের দিক থেকে চিনের তৈরি এই বিমানগুলি অত্য়াধুনিক হলেও, পারফরমান্সের দিক থেকে আহামরি নয়।
২০১৮ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের মধুপুরের রসুলপুর ফায়ারিং রেঞ্জে মহড়ার সময় বিমানবাহিনীর এফ-৭ বিজি প্রশিক্ষণ বিমান ভেঙে পড়ে, মৃত্য়ু হয় পাইলটের।এরপর ২০২১ সালের নভেম্বরে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে ওড়ার পর বঙ্গোপসাগরে ভেঙে পড়ে এফ-৭ এমবি যুদ্ধবিমান। তাতেও মৃত্য়ু হয় পাইলটের।দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী।মঙ্গলবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছেন মহম্মদ ইউনূস।