প্রসেনজিৎ সাহা, ত্রিপুরা: অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ। আগরতলা স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে আগরতলায় ফিরে আসছেন ভারত থেকে যাওয়া পর্যটকরা। আবার পর্যটনের জন্য ভারতে আসা বাংলাদেশের নাগরিকরাও দুশ্চিন্তা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন নিজের দেশে। স্বাভাবিক দিনে আগরতলা আন্তর্জাতিক স্থলবন্দরে প্রতিদিন ৩০০০ এরও বেশি যাত্রী আসা যাওয়া করতেন, সেই জায়গা ফাঁকা। বর্তমান পরিস্থিতি  বিবেচনা করে বিএসএফ ও বিজিবির রিট্রেইট প্যারেড স্থগিত রাখা হয়েছে দু-দিনের জন্য।


সংরক্ষণ-বিতর্কে ফের উত্তাল বাংলাদেশ। সরকারি চাকরিতে, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য় তিরিশ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন ক্রমশ হিংসাত্মক চেহারা নিচ্ছে। ইতিমধ্য়ে সংঘর্ষে প্রাণ গেছে ছ'জনের। আহত শতাধিক। পরিস্থিতি সামাল দিতে, স্কুল, কলেজ, বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে হাসিনা সরকার। রাস্তা ঢেকেছে মাথায়। আর আকাশে কুণ্ডলী পাকানো ধোঁয়া। একদিকে লাঠিসোঁটা হাতে আন্দোলনকারীরা। অন্য়দিকে, সশস্ত্র নিরাপত্তা বাহিনী। একদিকে আন্দোলনকারীরা ইট-পাটকেল ছুড়ছে। পাল্টা নিরাপত্তা বাহিনীর দিক থেকে শোনা যাচ্ছে গুলির শব্দ। কখনও আবার বোমার শব্দ শোনা যাচ্ছে। যেনও যুদ্ধ লেগেছে। তিন দিনের বিক্ষোভে, বাংলাদেশে এখন এরকমই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি। আন্দোলনের আঁচে জ্বলছে ঢাকা-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্য়ালয়। 


সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে একাধিক জনের। আহত শতাধিক।পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর, যে সকুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্য়ালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার। সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ-বিতর্কের জেরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি।মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য় ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিলের দাবি। যা ৬ বছর আগে, ২০১৮ সালেও বাংলাদেশকে অশান্ত করেছিল। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর আলাদা দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। তার পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৭২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মুজিবর রহমান বাংলাদেশে সংরক্ষণ-ব্য়বস্থা চালু করেন। যেখানে ৩০ শতাংশ সরকারি চাকরি মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য় সংরক্ষিত রাখার কথা বলা হয়।


আরও পড়ুন, তারকেশ্বেরের শ্রাবণী মেলায় ভক্তদের ঢল, আরও ৭ জোড়া বিশেষ ট্রেন পূর্ব রেলের, কবে কখন কোথা থেকে ?


এছাড়া মহিলাদের জন্য় ১০ শতাংশ, অনুন্নত জেলার বাসিন্দাদের জন্য় ১০ শতাংশ, আদিবাসীদের জন্য় ৫ শতাংশ, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য় ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত। এই ৫৬ শতাংশ বাদে ৪৪ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখা হয় সাধারণ প্রার্থীদের জন্য়। ২০১৮ সালে সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দেওয়ার পর, এই ব্য়বস্থা খারিজ করে মুজিবর-কন্য়া শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু, ২০২১ সালে হাসিনা সরকারের এই নির্দেশকে চ্য়ালেঞ্জ করে, হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন কয়েকজন।যার প্রেক্ষিতে এই পয়লা জুলাই, সংরক্ষণ ব্য়বস্থা ফের কার্যকরের নির্দেশ দেয় আদালত। এরপরই, মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের জন্য় ৩০ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিলের দাবিতে, শুরু হয় আন্দোলন। যা এখন কার্যত যুদ্ধের চেহারা নিয়েছে। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।