তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: বাংলা ও বাঙালির সঙ্গে শাড়ির যোগাযোগ অবিচ্ছেদ্য। বাংলার শাড়ি শুধু দেশের অন্য রাজ্যেই নয়, গোটা বিশ্বে সমাদৃত। আধুনিক ফ্যাশনে অনেক আগে থেকেই নিজের জায়গা করে নিয়েছে বাঙালির শাড়ি। বাংলার শাড়ি বললেই যে কয়টা নাম সবার আগে আসে, তাদের মধ্যেও প্রথম দিকে থাকে বালুচরী আর স্বর্ণচরী শাড়ি। 


বাংলার অহঙ্কার বিষ্ণুপুরের (Bishnupur) বালুচরী (baluchari saree)-স্বর্ণচরী (Swarnachari Saree)। বিদেশের বাজারেও বিপুল চাহিদা এই শাড়ির। ওই শাড়ি দিয়ে বিষ্ণুপুর মেলায় আয়োজিত ফ্যাশন শো। বালুচরী, স্বর্ণচরী পরে ব়্যাম্পে হাঁটলেন মডেলরা। তাঁদের সঙ্গে ব়্যাম্পে হাঁটলেন তৃণমূল নেত্রী ও অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Sayantyika Banerjee)।


দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের বাজারেও সমাদৃত বাঁকুড়ার (Bankura) বিষ্ণুপুরের বালুচরী ও স্বর্ণচরী শাড়ি। সেই বাজারকেই আরও বড় করে তুলতে করতে উদ্য়োগ নিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসনের উদ্যোগে বিষ্ণুপুর মেলার ষষ্ঠ দিনে যদুভট্ট মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল ফ্যাশন শো। বালুচরী, স্বর্ণচরী পরে র‍্যাম্পে হাঁটলেন বাংলারই নারীরা। পা মেলালেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, 'এটা হাতে বোনা হয়, অনেক সময় লাগে। এক একটা শাড়ি এক্সক্লুসিভ হয়। আমরা চাই এই শিল্পীরা এবং তাঁদের পরের প্রজন্মও যাতে এই শিল্পের মাধ্যমে জীবিকা অর্জন করতে পারে। এই মেলাতে প্রত্যেক শিল্পীদের সুন্দর এবং যোগ্য মঞ্চ দেওয়া হয়েছে।'


কথায় আছে গান,বাজনা, মতিচুর এই তিন নিয়ে বিষ্ণুপুর। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর যদি গান-বাজনা আর মতিচুরের শহর হয়ে থাকে, তাহলে পুরোটা বলা হয়ে ওঠে না। কারণ এই শহরের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। আর সেই ইতিহাস বলে বিষ্ণুপুর হস্তশিল্প ও কুটিরশিল্পের অন্যতম জায়গাও বটে। কুটিরশিল্পের কথা উঠলেই আসবে বালুচরী ও স্বর্ণচরীর নাম। বিষ্ণুপুরের ঐতিহ্যবাহী কুটিরশিল্প বালুচরী। বিষ্ণুপুরের বালুচরীর নামডাক এখন বিশ্বজনীন। গ্লোবাল আইডেন্টিফিকেশান স্বীকৃতি বালুচরীর মুকুটে গুঁজে দিয়েছে নয়া পালক। বিশ্বের নতুন প্রজন্মের কাছে বালুচরীকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে বিগত বেশ কয়েকবছর ধরেই ফ্যাশন শো-এর আয়োজন করে আসছে বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসন ও বিষ্ণুপুর মেলা কমিটি। এবারও তার অন্যথা হয়নি। বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, 'এটা বিষ্ণুপুরের সিম্বল। সেটাকে প্রোমোট করার জন্য়ই এই আয়োজন।'


ফ্যাশন শো-এ কোনও বড় নাম নয়, ভরসা রাখা হয়েছে জেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলার মেয়েদের উপরেই। অডিশন করে বেছে নেওয়া হয়েছে আগ্রহীদের মধ্য থেকে। বাছাই করা হয়েছে প্রায় ৫০ জন মডেল। স্থানীয়রা ছাড়াও এই তালিকায় ছিলেন ভিন জেলার বেশ কয়েকজন মডেল। এরপর তাদের প্রশিক্ষণ হয়েছে। প্রশাসনের তরফেই ওই মডেলদের ব়্যাম্পে হাঁটা, ভঙ্গিমার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তারপর ভিড়ে জমজমাট বিষ্ণুপুর মেলার ষষ্ঠ দিনের সন্ধ্যায় বালুচরী-স্বর্ণচরী পরে র‍্যাম্পে হাঁটলেন তাঁরা। পা মিলিয়েছেন অভিনেত্রী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর পরনেও ছিল বালুচরী শাড়ি।


আরও পড়ুন: শিশিরকে প্রণামের শাস্তি? সুবল মান্নাকে ইস্তফার নির্দেশ দিল তৃণমূল