পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: আন্দোলনকারী ও বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করতে চাইছে বিজেপি। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্বের মন্তব্যে শুরু হয়েছে জল্পনা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে, বুথ স্তরের সংগঠনের দুর্বলতা ঢাকতেই এমন কৌশলের ভাবনা? এই নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল।
একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ, নিত্যদিন রাজপথে আছড়ে পড়ছে চাকরি প্রার্থীদের ক্ষোভ আর অসংখ্য তরুণ-তরুণীর এই ক্ষোভ-অসন্তোষে ভর করেই ভোটের পালে হাওয়া টানতে চাইছে বিজেপি। সোমবার, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠকের পর, সেই ইঙ্গিত দিয়েছে বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার বিজেপি নেতৃত্ব।
সূত্রের খবর, যোগ্য, বঞ্চিত, আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করার ভাবনাচিন্তা চলছে।
বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল, যখন বুথ সশক্তিকরণ অভিযানে গ্রামে গ্রামে বুথে বুথে পৌছেছি, শিক্ষিত বেকাররা, যারা কলকাতার রাজপথে আন্দোলন করচেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, আর চাকরি পাওয়ার আশা নেই। মুখ্যমন্ত্রী আবেদনে সাড়া দেননি। মুখ্যমন্ত্রীকে জবাব দিতে চাইছে বিজেপির পতাকার তলায় প্রার্থী হিসেবে এসে জবাব দিতে চাইছে। অবশ্যই তাদের প্রার্থী করব।
গেরুয়া শিবির সূত্রের খবর, রাজ্যের মোট বুথের ৪০ শতাংশে ভাল সংগঠন রয়েছে বিজেপির। তবে এর সিংহভাগই উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে। ৩০ শতাংশ বুথে কমিটি থাকলেও, তার বেশিরভাগই খাতায় কলমে এবং তেমন সক্রিয়ও নয়। বাকি, রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ বুথে বিজেপির সংগঠন প্রায় নেই বললেই চলে!
এই সাংগঠনিক ত্রুটি মেরামত করতেই কি ক্ষোভে ফুঁসতে থাকা তরুণ-তরুণীদের কাজে লাগাতে চাইছে রাজ্য বিজেপি? তা নিয়ে আগেই পূর্ব বর্ধমানের মেমারির জনসভায় ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য শোনা গিয়েছিল বিরোধী দলনেতার মুখে।
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বলেছিলেন, আমি আমার মণ্ডল সভাপতিদের বলব, বুথ সভাপতি যদি হওয়ার জন্য কেউ সাহস না পায়, ওই গ্রামে গিয়ে, SSC কে দিয়েছিল? টেট পাস করে, PTTI থাকা সত্ত্বেও, কে প্রাইমারির চাকরি পায়নি। আর এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য ১১ বছর চাকরি না পেয়ে, কার বয়স ৪০ হয়ে গেল, এমন ছেলেকে বা মেয়েকে খুঁজে বের করে, বুথ সভাপতির দায়িত্ব দেন, তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকৃত যন্ত্রণাটা কি, তা ওই যুবক বা যুবতীটি যিনি ভুক্তভোগী, তিনি বুথের লোকেদের বলতে পারবেন।
নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি বকেয়া ডিএ নিয়েও ক্ষোভ বাড়ছে রাজ্যে। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, যে সব শিক্ষক ডিএ-বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ফুঁসছেন, তাঁদেরও পঞ্চায়েতে টিকিট দেওয়ার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে।