বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটির নিধিরামপুরে বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু। বাড়ির কাছে গাছে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার। দেহের সঙ্গে বাঁধা ছিল হাত। মৃতের নাম শুভদীপ মিশ্র।পরিবারের অভিযোগ, বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে বছর ২৫-এর শুভদীপকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেহ উদ্ধারে গেলে পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা।


এই ঘটনায় বিজেপি নেতার প্রেমিকা, তাঁর স্বামী, দেওর-সহ ৩ জনকে আটক করেছে গঙ্গাজলঘাটি থানার পুলিশ। শালতোড়ার বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির অভিযোগ, বাড়ি এসে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা। সেই ভয়েই গত এক সপ্তাহ বাড়ি ফেরেননি শুভদীপ। দলীয় যোগ অস্বীকার করে পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা বলে পাল্টা দাবি করেছে তৃণমূল। 


প্রসঙ্গত, গত ২৬ অক্টোবারও উঠেছিল একটি ভয়াবহ অভিযোগ। বিজেপি কর্মীকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে অশান্ত হয়েছিল শান্তিপুর। তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগে রাস্তা অবরোধ করা হয়েছিল। আগুন জ্বালিয়ে ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল বিজেপি। বিজেপির বুথ সহ সভাপতির বাবাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগে আটক হয়েছিলেন ১ তৃণমূল সমর্থক। নিহত বিজেপি কর্মীর নাম অধীর সরকার। বিসর্জনের শোভাযাত্রা থেকে ফেরার পথে প্রকাশ্যে হামলার অভিযোগ উঠেছিল । দুই তৃণমূল সমর্থক আনন্দ ও গোকুল সরকারের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। খুনের নেপথ্যে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল, অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি তুলেছিল তৃণমূল।


মে মাসে পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় খুন হন বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া। অপহরণ করে খুনের অভিযোগ তোলে পরিবার। ভর সন্ধেয় বাড়ি ফেরার পথে স্ত্রীর সামনেই প্রথমে মারধর করা হয়েছিল বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে। এরপর তাঁকে মোটরবাইকে চাপিয়ে জোর করে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা, দাবি পরিবারের। ওই দিনই গভীর রাতে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে বিজেপি নেতার দেহ মেলে। মাথায় ভারী কিছু দিয়ে মেরে খুন করা হয়েছিল তাঁকে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করে পুলিশ। রাতে থানার সামনে ময়নার বিধায়ক অশোক দিন্দার নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।


 বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, খুনের পিছনে হাত রয়েছিল ময়নার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সংগ্রাম দলুইয়ের। প্রাক্তন বিধায়কের পাল্টা অবশ্য দাবি, পারিবারিক বিবাদের জেরে এই খুন। পঞ্চায়েত ভোটের গোটা পর্বে বিরোধী শিবিরের নেতা-কর্মী খুনে একাধিক বার আঙুল উঠেছিল শাসকদলের দিকে। বস্তুত, ময়নাতেই আর এক দলীয় নেতা খুনের প্রতিবাদে বনধের ডাক দিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেছিলেন,'পরিবারের সামনেই বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়েছে। খুনিদের কাছে থেকে বিজেপি নেতার নিথর দেহ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। চোরের মতো দেহ নিয়ে মর্গে রেখেছে পুলিশ।' 


আরও পড়ুন, দীপাবলির আগে পেট্রোল-ডিজেলের দরে হেরফের, কী দাম কলকাতায় ?


অপরদিকে এর আগে, গত ২৯ এপ্রিল বিজেপি নেতা রাজেন্দ্র সাউকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। এর পাশাপাশি পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু ঘিরে হইচই হয়েছিল সবংয়ে। প্রশ্ন তুলেছিল হেমতাবাদকাণ্ডও।