শিবাশিস মৌলিক ও পূর্ণেন্দু সিংহ, কলকাতা: পার্টি অফিসে তালাবন্দি করে বিক্ষোভের ঘটনায় নাম না করে বিজেপির (BJP) বাঁকুড়া (Bankura) বিধানসভার প্রাক্তন আহ্বায়ক কৌশিক সিন্হাকে নিশানা করলেন সুভাষ সরকার। একইসঙ্গে তৃণমূল (TMC) থেকে আসা নেতাকে বহিষ্কারেরও ইঙ্গিত দিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী। পাল্টা জবাব দিয়েছেন কৌশিক সিন্হাও। 


কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী এবং বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার (Subhas Sarkar) বলেন, 'আমাদের এক নেতা যিনি তৃণমূল থেকে এসেছেন তিনি এরকম ঘটনা ঘটাচ্ছেন। তাঁর অঙ্গুলিহেলনেই এমন হচ্ছে।'


বিজেপি যখন নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূলকে বিদ্ধ করছে, তখন বাঁকুড়ায় সেই নিয়োগ দুর্নীতি ইস্য়ুতেই সামনে চলে এসেছে বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্ব! প্রভাব খাটিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারের দেহরক্ষী এবং বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বিজেপির বাঁকুড়া বিধানসভার প্রাক্তন আহ্বায়ক কৌশিক সিন্হা। যিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছেন। এবার দলীয় কোন্দল আরও স্পষ্ট করে, সেই কৌশিক সিন্হার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শানালেন বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। তিনি বলেন, 'সাংগঠনিক ব্য়াপার। জেলা নেতৃত্ব রাজ্য় ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। শো-কজ করা হয়েছে। বহিষ্কারের জন্য়ও চিঠি গিয়েছে।'


সম্প্রতি বাঁকুড়াতেই বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকারকে, পার্টি অফিসে তালাবন্দি করে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বিজেপি কর্মীদের একাংশ। সেই বিক্ষোভে নেতৃত্বে দেওয়ায় বাঁকুড়া বিধানসভার বিজেপির প্রাক্তন আহ্বায়ক কৌশিক সিন্হা-সহ একাধিক নেতাকে শো-কজ করা হয়। শো-কজের জবাবও দেন তাঁরা। কৌশিক সিন্হা বলেন, 'দলের মঙ্গলের জন্য় আমরা কিছু দাবি দাওয়া করেছিলাম। যে দলের সাংগঠনিক যে পরিকাঠামো আছে সেটা মেনে কাজ করা উচিত। গত পঞ্চায়েত ভোটে দলের ভরাডুবির জন্য় বিশাল সাংগঠনিক ব্য়র্থতা কাজ করেছে। মৌখিকভাবে আবেদন করার পরে আমরা চিঠি দি। দলের অভ্য়ন্তরে আলোচনার জন্য় চিঠি দি। কিন্তু, আমাদের মিথ্যা বদনাম করে শো-কজ করা হয়। আমাদের না জানিয়ে জেলা কমিটিও পরিবর্তন করা হয়।'


বাঁকুড়ার বিজেপি জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল বলেন, 'বিগত দিনে যেভাবে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করেছিল নিজেদের সুবিধার জন্য। তাঁরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। পার্টির নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে কাজ করতে পারছেন না তাঁদের শো-কজ করা হচ্ছে। শো-কজের ক্ষেত্রে উত্তরের পরিবর্তে অন্য় পন্থা অবলম্বন করছেন। তাঁদের পুরনো পার্টির যে ইন্ধন রয়েছে সেটা স্পষ্ট হচ্ছে।'


গোটা ঘটনায় কটাক্ষ করেছে তৃণমূল (TMC)। বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা মুখপাত্র মহাপ্রসাদ সেনগুপ্ত, 'এটা তো হাস্য়কর ব্য়াপার। নিজেদের দলের অন্তর্কলহকে চাপা দেওয়ার জন্য় নিজেদের লজ্জাকে মানুষের কাছে চাপা দেওয়ার জন্য় এরা তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে। বিভিন্ন দুর্নীতি বিজেপি দলটার মধ্য়ে বাসা বেঁধেছে। সেই দুর্নীতির ফলেই একদল দুর্নীতির সব খাচ্ছে আরেক দল বঞ্চিত হচ্ছে। যারা খাচ্ছে তাদের সঙ্গে বঞ্চিতদের লড়াই।'


আরও পড়ুন:'জওয়ান'-এর হুকস্টেপে মাত জিতুর, দেবকে শুভেচ্ছা অনুপম খেরের, আজকের 'সোশ্যালে সেরা'