প্রসূন চক্রবর্তী, বাঁকুড়া: নেতাজি (Netaji Subhas Chandra Bose) বসেছিলেন সেই চেয়ারে। সেই স্মৃতি ধরে রাখতে আর কেউ কখনও বসেনি ওই চেয়ারে। স্মৃতি আগলে রেখেছে বাঁকুড়ার (Bankura) দেশুড়িয়া গ্রামের কর্মকার (Karmakar) পরিবার। নেতাজির (Netaji Subhas Chandra Bose) স্পর্শ পাওয়া কাঠের চেয়ার ৭২ বছর ধরে বুক দিয়ে আগলে রেখেছেন কর্মকার পরিবারের সদস্যরা।


সালটা ১৯৪০। বাংলার আকাশে ক্রমশ তীব্র ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের। ২৮ এপ্রিল তপ্ত বৈশাখে বাঁকুড়ায় সুভাষ চন্দ্র বসু এসেছিলেন গঙ্গাজলঘাটির বুকে সভা করতে। মঞ্চে তাঁর বসার জন্য রানিগঞ্জ (Ranigunje) থেকে ভাড়া করে আনা হয়েছিল সুন্দর সোফা। স্থানীয় নেতৃত্বের বসার জন্য মঞ্চে বরাদ্দ ছিল স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা কাঠের চেয়ার। নেতাজি সোফা সরিয়ে বসার জন্য টেনে নিয়েছিলেন সাধারণ একটি কাঠের চেয়ারকে (Wooden Chair)। আগুন ঝরানো বক্তৃতা শুনেছিল বাঁকুড়াবাসী।  সভা শেষে নেতাজি মঞ্চ ছাড়তেই আর দেরি করেননি দেশুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রামরূপ কর্মকার। কারণ, তাঁর বাড়ি থেকে আনা চেয়ারেই বসেছিলেন নেতাজি (Netaji Subhas Chandra Bose) । মঞ্চে উঠে সেই চেয়ার মাথায় তুলে হেঁটে সেদিন বাড়ি ফিরেছিলেন রামরূপ কর্মকার।


ওই চেয়ারের জায়গা হয় বাড়ির ঠাকুর ঘরে। বাড়ির সবাইকে জানিয়েছিলেন চেয়ারে নেতাজির ছোঁয়া আছে। তাই সেই চেয়ার যেন যত্নে রাখা হয়। তারপর দামোদর দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। দেশ স্বাধীন হয়েছে। নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের মীমাংসা হয়নি এখনও। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বুক দিয়ে কর্মকার পরিবার আগলে রাখেন নেতাজির (Netaji Subhas Chandra Bose) ছোঁয়া পাওয়া সেই সাধারণ কাঠের চেয়ারটিকে। পরিবারের কূলদেবী মনসার নিত্য পুজোর পাশাপাশি শূন্য কাঠের চেয়ার কর্মকার বাড়িতে পূজিত হয় দেবতা জ্ঞানে। শূন্য কাঠের চেয়ারকে ঘিরে যাবতীয় আবেগ ও অহঙ্কার আবর্তিত হয় দেশুড়িয়া গ্রামের কর্মকার পরিবারের।


আরও পড়ুন: Netaji Birth Anniversary: ‘অমর জ্যোতি নিভিয়ে নেতাজির মূর্তি বসালে দেশপ্রেম হয় না,’ কটাক্ষ মমতার