পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া : ৩০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত হিমঘর থেকে বের করে নিতে হবে মজুত রাখা আলু। খোলা বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্য সরকারের নির্দেশে এমনিতেই মাথায় হাত পড়েছিল কৃষকদের। এবার ১ ডিসেম্বর থেকে আলু সংরক্ষণে অতিরিক্ত ভাড়া দিতে হবে, বিজ্ঞপ্তি দিল বাঁকুড়ার হিমঘর কর্তৃপক্ষ। 


১ ডিসেম্বর থেকে হিমঘরে আলু রাখতে গুনতে হবে অতিরিক্ত ভাড়া। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই হিমঘর থেকে আলু বের করার চাপ ছিলই। তার ওপর হিমঘরে আলু সংরক্ষণে লাগবে অতিরিক্ত ভাড়া, বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে বাঁকুড়া কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন। যেখানে বলা হয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বরের জন্য অতিরিক্ত আলু সংরক্ষণে অতিরিক্ত ২২ টাকা কুইন্ট্যাল পিছু ভাড়া লাগবে।


বাঁকুড়া হিমঘর কর্তৃপক্ষ সর্বজিৎ কুণ্ডু বলেন, আমাদের জেলা স্টোর অ্যাসোসিয়েশনের তরফে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ১ ডিসেম্বর থেকে যে আলুটা রাখা হবে ২২ টাকা কুইন্ট্যাল পিছু অতিরিক্তি দিতে হবে। সকলে মিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।


একদিকে সরকার, অন্য দিকে হিমঘর কর্তৃপক্ষ। জোড়া বিজ্ঞপ্তিতে মাথায় হাত বাঁকুড়ার আলু চাষি থেকে ব্যবসায়ীদের।


জানা গিয়েছে, নভেম্বর পর্যন্ত হিমঘরে আলু সংরক্ষণে কুইন্টাল পিছু ১৭৭ টাকা নেওয়া হয়েছিল। ১ ডিসেম্বর থেকে সেটাই পড়বে কুইন্টাল প্রতি ১৯৯ টাকা। 


এনিয়ে ওন্দার চাষি ভ্রমর ঘোষ বলেন, এমনিতে মরে আছি। এত আলু। সেগুলো বের করতে বলছে। এবছর প্রচুর ফলনও হয়েছে আলুর। এমনিতে ঋণ করে চাষ করেছি। এবার হিমঘরে বাড়তি টাকা কীভাবে দেব। আত্মহত্যা ছাড়া উপায় নেই।


ওন্দার অপর এক চাষি অভিজিৎ গড়াই বলেন, আমরা চাষিরা দাম পাচ্ছি না। এর পর হিমঘরের মালিকরা ভাড়া বাড়ালে মরে যাব। সরকার দেখু, চাষিরা যাতে বাঁচতে পারে।


জেলার প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ায় ৩০ নভেম্বরের পরও হিমঘরে ১৮ থেকে ২১ শতাংশ আলু মজুত থাকবে।


প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সভাপতি বিভাস দে বলেন, কৃষি বিপণন মন্ত্রীকে আবেদন করেছি যাতে একই ভাড়ায় আলু রাখা যায়। তার সদুত্তর পাইনি। আমরা আরও আলোচনা করব এনিয়ে। স্টোর মালিকদের সঙ্গেও বসব। যাতে নিজেদের মধ্যে সমাধান বের করা যায়।


এই পরিস্থিতিতে কীভাবে হবে সমস্যার সমাধান, সেদিক তাকিয়ে বাঁকুড়ার আলু চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা।