পূর্ণেন্দু সিংহ, বাঁকুড়া: এবিপি আনন্দের খবরের জেরে বাঁকুড়া শহরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প ত্রিফলা বাতি মেরামত করে করা হল। এই ঘটনা নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
বাঁকুড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দু'দফায় ৬০ লক্ষ টাকা খরচ করে বাঁকুড়া শহরকে ত্রিফলা আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেই ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি বেহাল হয়ে পড়ে। এবিপি আনন্দে সেই খবর সম্প্রচার করা হয়। এর জেরে নড়েচড়ে বসে বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক বোর্ড। ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ মেরামতির কাজ শুরু হয়।
বাঁকুড়া পুরসভার পক্ষ থেকে শহরের ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি সারানো হওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। কার্তিক মাল নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা এবিপি আনন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছেন, ‘ত্রিফলা আলো যখন প্রথম চালু হয়, বাঁকুড়া শহর আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তারপর আলো বন্ধ হয়ে যায়। আপনারা যেভাবে সেই খবর তুলে ধরেছিলেন, তার ফলে বর্তমানে আবার চালু হয়েছে আলো। খুব ভাল লাগছে। আপনারা আলোর বেহাল দশা তুলে ধরার পর প্রশাসনের নজরে আসে। সেই কারণে বাঁকুড়া শহর সেই আগের রূপ ফিরে পেল।’
পিকু দুবে নামে অপর এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমরা বাঁকুড়াবাসী হিসাবে দুঃখ পেয়েছিলাম। আজ আমরা দেখলাম শহরে আবার আলো জ্বলছে। ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ মুখ্যমন্ত্রীকে, ধন্যবাদ আপনাদের।’
সাধারণ মানুষ খুশি হলেও, ত্রিফলা আলো নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। বিজেপি-র রাঢ়বঙ্গ কনভেনার পার্থ কুণ্ডু বলেছেন, ‘সামনে পৌর নির্বাচন। এই পৌর নির্বাচনে এদের এখন ঘুম ভেঙেছে। কিন্তু মানুষ তো বুঝতে পারছে যখন নির্বাচন আসে তখন তাদের মনে পড়ে। বাকি সময়ে তারা পরিষেবা দিতে ব্যর্থ এবং সেগুলো যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করতেও ব্যর্থ। ওরা শুধু রাজনীতি করে আর ভোটের সময় তাদের ঘুম ভাঙে। ভোট মিটে গেলে আবার এগুলি অবহেলায় জরাজীর্ণ হয়ে যাবে। মানুষ বুঝতে পেরেছে, এই পৌর প্রশাসক ব্যর্থ। আগামী পৌর নির্বাচনে ওদের যোগ্য জবাব দিবে মানুষ।’
পাল্টা বাঁকুড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর সদস্য গৌতম দাস বলেছেন, ‘আপনাদের খবরের মাধ্যমে এই ঘটনা আমাদের চোখের সামনে এসেছে, এটা সত্যি। আমরা এক বছর আগে পৌরসভার প্রশাসক বোর্ডে বসেছি। তারপর এটা আমাদের চিন্তা-ভাবনার মধ্যে ছিল। তৎকালীন বোর্ড যে ত্রিফলা বাতিগুলি লাগিয়েছিল, সেগুলি অকেজো অবস্থায় ছিল। আমরা কলকাতা থেকে কর্মী এনে আলোগুলি ঠিক করিয়েছি। শুধু ত্রিফলাই নয়, বাঁকুড়া শহরের সমস্ত আলো রক্ষণাবক্ষেণের ব্যবস্থা করেছি। বিজেপি মানুষের পাশে থাকে না, উন্নয়ন করে না। ওরা শুধু সমালোচনা করে। বিজেপি-কে বাঁকুড়ার মানুষ দেখতে পায় না। আমরা মানুষের পাশে আছি, ভবিষ্যতেও থাকব। আমরা একটা এজেন্সি রেখেছি এবং পৌরসভার নিজস্ব টিমও আছে। এই বাতিগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।’